রাবি উৎসবে আর্থিক অনুদান চেয়ে সাবেক সমন্বয়কের চিঠি

আপডেট: July 29, 2025 |
inbound6148082127483027401 1
print news

‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ নামের একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আর্থিক অনুদান ও সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। তাঁর এই আবেদনে ‘জোরালো সুপারিশ’ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব।

আবেদনের একটি অনুলিপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নানা আলোচনা হচ্ছে। ফেসবুকে অনুদান চাওয়ার চিঠির অনুলিপি দিয়ে অনেকেই লিখেছেন, ৭৬ লাখ টাকা তোলার জন্য ৭০টি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

তবে সালাউদ্দিন আম্মার আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানান, দুই দিনের অনুষ্ঠানের জন্য ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকার অনুদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১টি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান চেয়ে আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪টি প্রতিষ্ঠানে চিঠি পৌঁছানো হয়েছে।

কোনো প্রতিষ্ঠানে ইংরেজিতে এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে বাংলায় প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বাংলায় করা একটি আবেদনে লেখা রয়েছে, ‘রাজশাহীর গৌরবময় ইতিহাসে ৩৬ জুলাই একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনটি আমরা “জুলাই আন্দোলন” হিসেবে স্মরণ করি, যেখানে বহু তরুণ শহীদ হয়েছিলেন এবং অনেকে আহত হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকারের সংগ্রামে। এই ঐতিহাসিক ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি “৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব।”

এই উৎসবে রাজশাহীর শহীদ পরিবার, আহতদের পরিবার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সম্মানিত সমন্বয়কবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।’

আবেদনপত্রে সালাউদ্দিন আম্মারের সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন কে এস কে হৃদয়, যিনি ক্যাম্পাস বাউলিয়ানার ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার এবং উৎসবের অন্যতম আয়োজক।

৯ জুলাই দেওয়া এই প্রস্তাবনায় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব ‘স্ট্রংলি রিকমেনডেড’ মন্তব্য করেন। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাছে ২১ জুলাই চিঠি পাঠানো হলে ২৩ জুলাই তারা ২ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়।

তবে এ বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘শুধু সালাউদ্দিন নন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ এলে তিনি রিকমেন্ড করেন। এটি তার দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি।’

চিঠি নিয়ে সমালোচনার পর ২৭ জুলাই ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে সালাউদ্দিন বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি এটিকে ‘ভয়াবহ মিডিয়া ট্রায়াল’ বলে দাবি করেন এবং জানান, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে বড় একটি কনসার্ট করতে চেয়েছিলেন।

প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবনা দেওয়া হলে জানানো হয়, বর্তমানে বাজেট নেই, তবে অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হবে। এরপর তিনি উপাচার্যের স্বাক্ষর নিয়ে প্রস্তাবনা দেন বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি, ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

সালাউদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৫ হাজার টাকা, চেম্বার অব কমার্স থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং নগর ভবন থেকে ২ লাখ টাকা অনুদান পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার আরেকটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৯টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছেন এবং আয়োজন শেষে প্রতিটি টাকার স্বচ্ছ হিসাব প্রকাশ করবেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘বিজয় উৎসব গত বছর করতে চেয়েছিলাম পারি নাই ফেনীর বন্যার কারণে, রাজশাহীর বিশেষ অবদান ছিল এই আন্দোলনে, তাই বিজয় উৎসবও হবে রাজশাহীতে।’

সূত্র: প্রথম আলো

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর