আফগানদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

হার না মানা এক গল্পের সাক্ষী হচ্ছে দেশের ক্রিকেট। যে গল্প রচিত হচ্ছে চট্টগ্রামের সাগরিকা পাড়ের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আফগানদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়ে এখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে আজ ফেবারিটের তকমা নিয়েই খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। টস হেরে শুরুতে বোলিং করে নাগালেই বেঁধে ফেলেছিল সফরকারীদের।
কিন্তু আফগানিস্তানের শক্তির জায়গা যে তাদের বোলিং ইউনিট সেটি কে না জানত!
যদিও তামিমদের পড়াশুনা ছিল মুজিব-রশিদ-নবিদের স্পিন নিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে এদিন ধস নামালেন অচেনা ফজল হক ফারুকী। বিপিএলে মিনিস্টার ঢাকার হয়ে বাজে পারফর্ম করা আফগান এ পেসার এদিন একাই তুলে নেন প্রথম চারটি উইকেট।
এরপর মুজিব এবং রশিদও পেয়েছেন শিকারের দেখা। দলীয় পঞ্চাশের আগে ছয় উইকেট হারিয়ে একসময় একশর আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল বাংলাদেশের ইনিংস।
কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে তুললেন। হার না মানা গল্প লিখলেন। যেন ধ্বংসস্তূপে ফুল ফোটালেন দুই তরুণতুর্কি টাইগার ক্রিকেটার আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। বুক চিতিয়ে লড়ে এরই মধ্যে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন।
এরই মধ্যে ৪৩ বলে ১০০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছেন।
আফগানিস্তানের দেওয়া মাত্র ২১৬ রানের সহজ টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় রান পঞ্চাশ না পেরোতেই ফিরে গেছেন দলের প্রথম সারির ছয় ক্রিকেটার। তবে এরপরই হাল ধরেন দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার আফিফ এবং মেহেদী মিরাজ।
সিঙ্গেল, ডাবল কিংবা বাজে বলে চার মেরে টপ অর্ডারের ধ্বংসস্তূপে যেন ফুল ফোটাচ্ছেন দুজনে মিলে। তবে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশকে এ ম্যাচটি জিততে হলে এখনো করতে হবে ৪৮ রান। হাতে আছে ৫৭ বল ।
আফিফ-মিরাজ জুটির পর আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান নেই। আর তাই এই ম্যাচ এখনো আফগানিস্তানের দখলে। তবে সংগ্রামটা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন এ দুজনে মিলে।
১৩ রানের মাথায় উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। ফজল হক ফারুকীর বল লিটন দাসের ব্যাটের কানায় লেগে গিয়েছিল উইকেটের পেছনে। উইকেটরক্ষক রহমানুল্লাহ গুরবাজ ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচটি তালুবন্দি করেন। যদিও প্রথম দফায় আম্পায়ার আউট দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে সফলতা পায় সফরকারীরা।
লিটন দাসের হতাশার দিনে হতাশা বাড়ালেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছিলেন তামিম। কিন্তু প্রত্যাবর্তনটা রাঙাতে পারলেন না। রান করলেন মাত্র ৮।
ফজল হক ফারুকীর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন দেশসেরা ওপেনার। কিন্তু এবারও প্রথম দফায় আউট দেননি আম্পায়ার। আবারও রিভিউ, আবারও আফগানিস্তানের সফলতা।
লিটন-তামিমের পথ ধরলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমও। এবারও বোলার সেই ফজল হক ফারুকী। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ৫ বল খেলে করেছেন মাত্র ৩ রান। ফজল হকের টানা চার উইকেটের পর বল হাতে নিয়েই সাফল্য পান তারকা স্পিনার মুজিব উর রহমান।
ফরচুন বরিশালের সতীর্থ সাকিব আল হাসান তার বল খেলতে গিয়েও ব্যাট থেকে গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। সাজঘরে ফেরেন সাকিব। তার আগে ১৫ বলে এক চারের মারে করেছেন ১০ রান।
এদিকে, ঘরের মাঠে অভিষেক ম্যাচটা রাঙানোর স্বপ্ন বুনেছিলেন চট্টগ্রামের ক্রিকেটার ইয়াসির আলি রাব্বি। কিন্তু টিম টাইগার্সের টপ অর্ডারে ধস নামানো আফগান পেসার ফজল হক ফারুকীর কাছে যেন পাত্তাই পেলেন না। পাঁচ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন।