নাইজেরিয়ায় অবৈধ তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ, নিহত শতাধিক
নাইজেরিয়ার রিভারস প্রদেশের একটি অবৈধ তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এক সরকারি কর্মকর্তা ও একটি পরিবেশবাদী গ্রুপের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।
রিভারস প্রদেশের পেট্রোলিয়াম সম্পদবিষয়ক কমিশনার গুডলাক ওপিয়াহ বলেছেন, প্রদেশের একটি অবৈধ তেল শোধনাগার স্থাপনায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়লে এতে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। পুড়ে যাওয়ায় তাদের অনেকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
ইয়ুথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাডভোকেসি সেন্টার জানিয়েছে, বিকট এ বিস্ফোরণে তেল কেনার জন্য লাইনে থাকা অনেকগুলো গাড়িও পুড়ে গেছে। পাইপলাইন থেকে তেল চুরি করে পরিশোধনের এমন অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অভিযান শুরু করলেও খুব বেশি সফলতা আসেনি। এর মধ্যেই গত বছরের অক্টোবরের বড় একটি বিস্ফোরণের পর এ দুর্ঘটনার খবর এল।
সরকারি হিসেবে আফ্রিকার বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ নাইজেরিয়ায় লাইনে ছিদ্র করে বা কেটে দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল চুরি হয়, যা উৎপাদনের ১০ শতাংশ। দারিদ্র্যপীড়িত তেল সমৃদ্ধ নাইজার উপত্যকায় সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ তেল পরিশোধন একটি আকর্ষণীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এতে প্রায়ই মারাত্মক সব দুর্ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। চরম বেকারত্বের কারণেই এমন ঝুঁকির পথ বেছে নিতে দেখা যায় সেখানে।
দেশটির প্রধান প্রধান বিভিন্ন তেল ক্ষেত্র থেকে বৃহৎ তেল কোম্পানিগুলোর জালের মতো বিস্তৃত পাইপলাইনগুলো থেকে চুরি করে এসব তেল অবৈধ ডিপোগুলোর ট্যাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেগুলো পরিশোধন করে তেল জাতীয় বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুত করা হয়। বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করতে গিয়ে প্রায়ই ভয়ানক এমন দুর্ঘটনা ঘটে।
জটিল এবং অবৈধ এ প্রক্রিয়ায় তেল পরিশোধন করতে গিয়ে দুর্ঘটনার পাশাপাশি দেশটির একটি অঞ্চল ভয়াবহ পরিবেশ দুষণও হচ্ছে। তেল সমৃদ্ধ বড় একটি অঞ্চলের কৃষি জমি, নদী, লেগুন তেলের দুষণের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর আগে গত অক্টোবর একই প্রদেশে এ রকম আরেকটি অবৈধ পরিশোধনাগারে বিস্ফোরণে শিশুসহ ২৫ ব্যক্তি নিহত হয়।