জাতিসংঘের অনুসন্ধানে হস্তক্ষেপ করবে না সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আমরা চাই সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ একটা তদন্ত হোক। আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করব না। তারা তদন্তের কাজে কোথাও গেলে, সেখানকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা বা থাকার ব্যবস্থা করতে হলে, সেসব লজিস্টিকস সহযোগিতা করতে আমরা রাজি আছি। এটি তাদের বলেছি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্তকাজ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন সরকারের কাছে কোনো সহযোগিতা চেয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এখনো তারা সহযোগিতার বিষয়ে কিছু বলেনি। তারা নিজেরাই সবকিছু আয়োজন করতে পারবে বলে মনে করছে। প্রয়োজন হলে তারা আমাদের জানাবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, জাতিসংঘের তদন্ত দল তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে, এই সময় তারা শীঘ্রই বাংলাদেশে তাদের তদন্ত শুরু করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের দল প্রচার এড়াতে পছন্দ করে কারণ তারা নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করতে চায়।
তৌহিদ হোসেন বলেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন বাংলাদেশ সরকারের কাছে সহায়তার অনুরোধ জানালে সরকার সহায়তা দেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল, সম্প্রতি দেশে এসেছে, এখনও তাদের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জোর দিয়ে বলেছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন কোনো ফৌজদারি তদন্ত নয় এবং এটি যে কোনো জাতীয় বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে আলাদাভাবে কাজ করে।
তদন্তটি গোপনীয় এবং দলটি তদন্তের সময় মিডিয়ার সাথে জড়িত হবে না।
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের একজন মুখপাত্র এর আগে বলেন, আমরা সত্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আবেদন করছি।
বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করছে।
ইউএন হিউম্যান রাইটস দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলকে তথ্য প্রতিষ্ঠা, দায়িত্ব চিহ্নিত করা, মূল কারণ বিশ্লেষণ এবং অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ পেশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং সংস্থাগুলোকে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট ২০২৪ সময়কালে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহার সম্পর্কিত সামাজিক মিডিয়া বা অন্য জনপরিসরে ইতিমধ্যেই নেই এমন তরতাজা তথ্য সরবরাহ করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তথ্য পাঠাতে হবে OHCHR-FFTB- Submissions@un.org-এ পাঠাতে হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দলটি ভুক্তভোগী, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, চিকিৎসা পেশাজীবী এবং প্রত্যক্ষর্শীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
ঘটনাস্থলের পরীক্ষা এবং তথ্য বিশ্লেষণের পর, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর একটি বিশদ মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করবে যার মধ্যে মূল ফলাফল, উপসংহার ও সুপারিশ থাকবে।