যুক্তরাষ্ট্রকে উপেক্ষা করে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে রাশিয়া চীন ও ভারত

আপডেট: August 7, 2025 |
inbound6270242693757835438
print news

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও তার শুল্কের রোষানল থেকে রেহাই পাননি। ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, বাণিজ্যিক হুমকি এবং একতরফা নীতি প্রয়োগের ফলে চাপে পড়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ।

তবে এবার এসব চাপ ও হুমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে একজোট হতে পারে বিশ্বের অন্যতম তিন মহাশক্তি রাশিয়া, চীন ও ভারত। মার্কিন বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে একসঙ্গে কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে এই দেশগুলো, যা বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

দীর্ঘ ছয় বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফরের ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন এক সময়ের কৌশলগত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে।

রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ভারতের ওপর আবারও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনে রুশ প্রশাসনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমরা (ট্রাম্পের) অনেক বিবৃতির কথাই শুনছি, যেগুলো আসলে হুমকি। বিভিন্ন দেশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা এই বিবৃতিগুলিকে বৈধ এবং ন্যায্য বলে মনে করছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যেকোনো সার্বভৌম দেশের স্বাধীনভাবে বাণিজ্যসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনো দেশের জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী এই বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক বোঝাপড়া হয়ে থাকে।’

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পেসকভের বক্তব্যে কোথাও সরাসরি ভারতের নাম উল্লেখ করা না হলেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ যে ট্রাম্পের শুল্কবাণের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা স্পষ্ট।

ট্রাম্পের এই হুমকির মাঝেই চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন মোদি। একই সময়ে চীন সফরে যাবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।

আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই সম্মেলন। মোদি সর্বশেষ চীন সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে। ২০২০ সালে লাদাখ সীমান্তে চীন-ভারত সেনাদের সংঘাতের পর দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ফাটল ধরার পর এই সম্পর্ক এখন উন্নতির পথে।

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসএসিও সম্মেলনে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ, বাণিজ্যসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। ভারতের পক্ষ থেকে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে। লক্ষ্য, সম্পর্ক পুনরুদ্ধার ও সীমান্ত ইস্যুতে উত্তেজনার হ্রাস।

এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ায় ব্রিকসের সম্মেলনে মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে নতুন কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা নীতির কারণে বিশ্বের কূটনৈতিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। চীন, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে নতুন এক মেরুকরণ গড়ে উঠছে, যা ভবিষ্যতে বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর