হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা : ট্রাইব্যুনালে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ

আপডেট: September 24, 2025 |
inbound5372676399683957320
print news

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা। তিনি প্রসিকিউশন এবং তদন্ত দলেরও সদস্য।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম মাকসুদ কামাল এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কথপোকথনের চারটি অডিও তিনি আদালতে উপস্থাপন করেন।

এসব অডিওতে এই তিনজনের সঙ্গে আন্দোলন দমনের বিষয়ে যার কণ্ঠ শোনা গেছে, সেটি শেখ হাসিনার বলে এ বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখানে শেখ হাসিনার কণ্ঠে ড্রোন দিয়ে শনাক্ত করতে এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়ার কথা বলতে শোনা যায়। ট্রাইব্যুনালে অডিওগুলো বাজিয়ে শোনানো হয়।

তানভীর হাসান জোহা এই মামলার ৫৩ নম্বর সাক্ষী। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বেঞ্চ তার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ট্রাইব্যুনালের আরেক সদস্য ছিলেন মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

সাক্ষ্য শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাকে জেরা করেন।

পরে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই সাক্ষী প্রসিকিউশনের এবং ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির অন্যতম সদস্য। ওনার সাক্ষ্য দেয়ার বিষয়বস্তু ছিল ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়ে যে ইভেস্টিগেশন করেছেন, তার কিছু অংশ। শেখ হাসিনার তিনটি অডিও সংবলিত সিডি জব্দ করেছেন। ৩টি মোবাইলের সিডি জব্দ করেছেন।

এই সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার নিকটাত্মীয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ফজলে নূর তাপসের একটি কথপোকথন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম মাকসুদ কামালের একটি কথপোকথন এবং হাসানুল হক ইনুর দুটি ফোনালাপের সিডি জমা দেন।

এই সাক্ষ্য বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।

মিজানুল ইসলাম বলেন, “শেখ হাসিনা এবং ফজলে নূর তাপসের কথপোকথনে আন্দোলনকারীদের দমনের জন্য উনি (শেখ হাসিনা) লেথাল উইপন, গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে শনাক্ত করে হেলিকপ্টারে গুলির কথা বলেছেন।”

অডিওতে এস এম মাকসুদ কামালকে তার বাসায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামসহ কয়েকজনের অবস্থানের কথা বলতে শোনা যায়।

এ ব্যাপারে মিজানুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় একজন শিক্ষক হিসেবে যে ধরনের কথাবার্তা বলেছেন; সন্ত্রাসী লালন পালনের যে প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। উনি সন্ত্রাসীদের কীভাবে লালন করবেন, কীভাবে ব্যবহার করবেন, তার একটা বর্ণনা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা ও হাসানুল হক ইনুর কথপোকথন নিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, এদেশে একাত্তর সালে মানুষ যুদ্ধ করেছিল বিদেশি দখলদারের বিরুদ্ধে, যারা এদেশের মানুষের ওপর বম্বিং করেছে, গুলি করেছে। দেশের একজন সরকারপ্রধান, যিনি তাকে নির্বাচিত দাবি করেন, তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ছত্রীসেনা এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছেন; বম্বিং করার নির্দেশ দিচ্ছেন।

এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা উনি বন্ধ করে দিয়েছেন। সেটাকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপন করতে চেষ্ট করেছেন। আরেকটি কাজ করেছেন, উনি বলেছেন যে, আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, ওরা পুড়িয়ে দিল সেতু ভবন। তার মানে আগুন দেয়ার নির্দেশ উনি দিয়েছেন। কিন্তু উনার কাঙ্খিত জিনিস না পোড়ায়ে অন্য স্থাপনা পুড়ে ফেলা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: বিডিনিউজ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর