নিউইয়র্কের মঞ্চে রোকেয়া রফিক বেবীর নির্দেশনায় “একটি চুরির গপ্পো’’


আগামী ২৬ আগস্ট শনিবার নিউইয়র্ক সময় সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্ত হবে, বাংলাদেশ থিয়েটার অব আমেরিকা এর ৩৭ তম প্রযোজনা,দারিও ফোর “The Virtuous Burglar”অবলম্বনে নাট্যকার আনিকা মাহিন একা রূপান্তরিত এবং নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী নির্দেশিত নাটক “একটি চুরির গপ্পো”।
নাটকটির নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী বলেন, নাটক শুরু হয় ক্লাউন এর সংলাপ থেকে। নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সুনির্দিষ্ট একটি স্থান চিহ্নিত হয় এবং এরপরে প্রবেশ করে “দ্যা ভার্চুয়াল বার্গলার “ দারিয়ো ফো এর বিখ্যাত প্রহসন। আনিকা মাহিন একা নাটকটির রূপান্তরিত নাম দিয়েছেন “একটি চুরির গপ্পো”। হুবুহু অনুবাদিত বিদেশি নাটক মঞ্চায়নে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। নাট্যকার ইটালির গল্পটিকে সহজ ভাবে বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত করে একটি বাংলা নাটক সৃষ্টি করেছেন। ফলশ্রুতিতে চরিত্র নির্মানে, সংলাপ প্রক্ষপনে অভিনেতাদের স্বাছন্দ্য হয়েছে শতভাগ। নাটকের ডিজাইন দাড় করাতে যারা আমাকে সাহায্য করেছে তাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।
বাংলাদেশ থিয়েটার অফ আমেরিকার সিনিয়র সদস্য এবং বর্তমান প্রযোজনার সমন্বয়কারী ফজলুল কবীর বলেন, যদিও দীর্ঘ বিরতির পর আমরা মঞ্চে নাটক আনলাম। আশাকরি নাটকটি দর্শকদের ভালো লাগবে। আমি এস এম সোলায়মানের সাথে কাজ করেছি আর এই নাটকে তার কন্যা আনিকা মাহিন একা নাট্যকার হিসেবে এবং স্ত্রী রোকেয়া রফিক বেবী পরিচালক হিসেবে অনেক কষ্ট সহ্য করে আমাদের নাটকটিকে মঞ্চে আনতে সাহায্য করেছেন। এই নাটকে আমরা সকল অভিনেতা-কলাকুশলী ও পৃষ্টপোষক আমরা আমাদের সবটুকু পরিশ্রম এবং আন্তরিকতা নিয়ে প্রস্তুত সুধি দর্শক শ্রোতাদের শিল্প পিপাসার প্রতি সম্মান জানাতে।
নাটকটির কাহিনী গড়ে উঠেছে, মূল নাটক থেকে আনিকা মাহিন একার রূপান্তরিত নাটকটির পয়েন্ট অব ডিপারটচার হলোঃ ক্লাউন বডি এর সংযোজন ও নাটক এর ক্লাইম্যকটিক সিকোয়েন্সে চতুর্থ দেয়াল ভেঙ্গে দেওয়া। এক চোর বেশ অবস্থাপন্ন রাজনৈতিক নেতার ফ্লাটে চুরি করতে ঢোকে। সে খবর পায় যে, বাড়ির মালিক এবং তাঁর স্ত্রী বাড়িতে থাকবে না। চুরি করার সময় ফোন বেজে ওঠে, চোরের স্ত্রী তাকে ফোন করে উপহার নিয়ে আসার জন্য। যখন চোর শুনতে পায় বাড়িতে মালিক ঘরে প্রবেশ করছে প্রেমিকাকে নিয়ে, যিনি আরেকজনের স্ত্রী, চোর তখন গ্র্যান্ড ফাদার ক্লকের পেছনে লুকোয়। পেন্ডুলামে তার মাথায় লেগে ঘড়ির সময় পাল্টে যায়। সমাজ পতি তার স্ত্রী সম্পর্কে যা তা বলে এবং তার প্রেমিকা তার স্বামী সম্পর্কে। এদিকে চোরের বউ আবার ফোন করলে বাড়ির মালিক ফোন ধরে। চোরের বউ মনে করে এটা তার স্বামী অন্য কারো সঙ্গে গোপনে প্রেম করছে। আর সমাজপতি মনে করে মহিলার স্বামী প্রাইভেট ডিটেকটিভ এবং তাঁর নিজের বউ ওকে ভাড়া করেছে। এমন সময় রাস্তায় এম্বুলেন্সের আওয়াজ শোনা গেলে, মালিকের প্রেমিকা মনে করে ডিটেকটিভ পুলিশে খবর দিয়েছে এবং মালিক কে বলে নিজের উপর পিস্তল চালাতে। যেই পিস্তল চালাতে যাবে তখন ঘড়িতে বেজে ১২.০০ টা । এতে বাড়ির মালিক এবং প্রেমিকা মনে করে ঘড়ি উলটা দিকে যাচ্ছে এবং এটি আত্মহত্যা না করার এক দৈব ইঙ্গিত। এদিকে পেন্ডুলামের উপর্যুপরি আঘাত সহ্য করতে না পেরে চোর ঘড়ির পেছন থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর প্রহসনের পালা একে একে উন্মোচিত হতে থাকে। প্রহসনের বাস্তবতা এবং বাস্তবতার পেছনের রাজনীতির একের পর এক আখ্যান উন্মোচনের নাটক একটি চুরির গপ্পো।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কুশীলব, আলমগীর চঞ্চল, স্বপ্না কাওসার, ফজলুল কবীর, শারমীন রেজা ইভা, রোকেয়া রফিক বেবী ও ফারুক আজম সহ অন্যান্য। নাটকটির কলাকুশলীরা হলেন, সহকারী নির্দেশক শামীম মামুন (লিটন) ও জেফ হোসেন, মঞ্চ পরিকল্পনা- স্বজ্জা ও নির্মান রোকেয়া রফিক বেবী, স্বপ্না কাওসার, জোসেফ কার্টার, কেভিন কার্টার এবং মনিরুল ইসলাম, আলোক নির্দেশনা ও প্রক্ষেপন আলোক লাইটিং ও জিয়াউল হক, আবহ্ সঙ্গীত শামীম মামুন (লিটন), প্রযোজনা অধিকর্তা স্বপ্না কাওসার এবং একটি চুরির গপ্পো নাটকটির প্রধান সমন্বয়কারী ফজলুল কবীর।