রাণীশংকৈলে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা


জাহাঙ্গীর আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় চলতি বছর সরিষার ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। চারদিকে হলুদের সমারোহ সরিষার ক্ষেত যেন প্রাকৃতিক এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশাবাদী চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার রাতোর,বাচোর, লেহেম্বা,হোসেন গাঁও,নন্দুয়ার,ধর্মগড়, কাশিপুর ও নেকমরদসহ মোট ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ গতবছর চাষাবাদ হয়েছে ৬০৫০ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর ৬৯৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।
যা গতবছরের তুলনায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা চাষাবাদ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় সরিষা বিক্রি করে ভালো লাভ হবে বলে আশা কৃষকদের।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়,সরিষা চাষে খরচ কম আর লাভ বেশি হওয়ায় উপজেলার কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে। জমি থেকে আমন ধান কেটে নেওয়ার পর জমি ফেলে না রেখে আগাম লাভজনক ফসল হিসেবে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
উপজেলার মিরডাঙ্গী থেকে বনগাঁও সড়কের রাস্তার দু’পাশে শুধু হলুদের সমারোহ।এ যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে ফসলের মাঠ দুলছে শুধু হলুদের রঙে। পাশাপাশি সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহের জন্য মৌবাক্সও স্থাপন করেছে মৌচাষিরা।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ১০-১২ মন খাঁটি মধু সংগ্রহ করা যাবে বলে ধারণা করছেন মৌচাষিরা। একদিকে খাঁটি মধু উৎপাদন ও সরিষা ফলনে শতকরা ২০% বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগ।
নন্দুয়ার ইউনিয়নের কৃষক পয়গাম আলী জানান ,গত বছর সরিষা চাষ করে বৃহত্তর ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক হিসেবে সম্মাননা পেয়েছি।
কৃষি অফিসের পরামর্শ ও নির্দেশনায় চলতি বছরেও ১০ একর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন ক্ষতি না হলে এবারও সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
একই ইউনিয়নের কৃষক মারুফ হোসেন জানান, কৃষি অফিসের প্রণোদনার সহায়তা পেয়ে সরিষা চাষাবাদ করেছি।প্রতিবছর তিনি সরিষার আবাদ করে ব্যাপক লাভবান হন। এবছরও তিনি এক একর জমিতে বারী জাতের সরিষার চাষাবাদ করেছেন।
রাতোর ইউনিয়নের সরিষা চাষী তসলিম উদ্দিন বলেন, অল্প খরচে এবং কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করে ভালো লাভবান হওয়া যায়। আমি প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে।
গাছে প্রচুর পরিমান ফুল ধরায় আশানুরূপ ফলন পাওয়ার আশাবাদী। আবহাওয়া ভালো থাকলে কিছুদিন পরেই ফলন ঘরে তুলতে পারবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, তৈলজাত ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ সরবরাহ এবং প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষার প্রদর্শনী বাস্তাবায়নের ফলে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাশাপাশি কৃষি অফিস সবসময় কৃষকদের সহযোগিতা, পরামর্শ এবং উদ্ধত্ত করার কারনে এবছর সরিষার বম্পার ফলন হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করি, ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন।