মাঞ্জারুল রানার ওখানে যেতে চাই: ডেভ হোয়াটমোর


সেই কবেকার কথা, সবার মনেও থাকে না হয়ত। তবে এক ভিনদেশীর মনে এখনো শোক উথলে ওঠে মাঞ্জারুল ইসলাম রানার কথা ভেবে। তিনি ডেভ হোয়াটমোর। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক কোচ এবারের বিপিএলে দায়িত্ব নিয়েছেন ফরচুন বরিশালে।
রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপের সময় দেখা হলে পরে হাই হ্যালো পর্ব শেষ হতেই জিজ্ঞাসা করেন,‘রানার ওখানে কিভাবে যাব, বলতে পারো?’
বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি স্পিনার মাঞ্জারুল ইসলাম রানা তাঁর অধীনেই খেলেছেন জাতীয় দলে। টিম কম্বিনেশনের কারণে ২০০৭ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা হয়নি খুলনার বাঁহাতি এই স্পিনারের, যিনি প্রয়োজনে ব্যাটিংটাও করে দিতেন। তারচেয়েও বড় কথা, সদালাপী মাঞ্জারুল স্নেহধন্য ছিলেন হোয়াটমোরের। সেই তিনি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের আগের দিন মারা যান মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায়।
আনন্দের মাঝে গভীর শোকের ঘটনা এখনো পোড়ায় হোয়াটমোরকে,‘ওর (মাঞ্জারুল) ওখানে যেতে চাই। সময় কিভাবে বের করব বুঝতে পারছি না।’
খুলনায় সরাসরি ফ্লাইট নেই যে ঝটিতি ঘুরে আসবেন। যেতে হবে যশোর বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে।
এই সমস্যার সমাধান অবশ্য আছে। তবে সেটি শুনে আঁতকে ওঠেন হোয়াটমোর!
-নড়াইলের সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজাকে অনুরোধ করলে তিনি হয়ত আপনাকে রানার বাসায় ড্রাইভ করে নিয়ে যাবেন।
-পাগল নাকি! পাগলার (মাশরাফি) গাড়িতে? আর নয়!
স্মৃতিকাতর হোয়াটমোরের মনে আছে একবার যশোর বিমানবন্দর থেকে তাঁকে ড্রাইভ করে নড়াইলে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঝোড়ো সেই ‘রাইড’ শেষে হোয়াটমোর প্রতিজ্ঞা করেছেন মাশরাফির গাড়িতে আর কখনো উঠবেন না!
শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ঘুরে জীবনের শেষ ল্যাপে হোয়াটমোর থিতু হয়েছেন শ্রীলঙ্কায়। ‘অস্ট্রেলিয়ার বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে কলম্বোয় বাড়ি কিনেছি।
খুব ভালো আছি। সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে বিশ্বের এই প্রান্তটাই আমার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অনেক তো দেখলাম’, ৬৯ বছর বয়সী হোয়াটমোরের উপলব্ধি। এবং ভালো আছেন তিনি। সেটি এই বয়সে তাঁর প্রাণচাঞ্চল্য দেখলেই বোঝা যায়, তিনি নিশ্চিত হয়ে বলেনও,‘খুব ভালো আছি। এখানে কত মানুষকে আমি চিনি। সবাই আমাকে চেনে। একটা হোমলি ফিল হয় সবসময়।’
শ্রীলঙ্কায় তিনি আর দশটা পর্যটক কিংবা ভিনদেশী পর্যটকের মত নন। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ হোয়াটমোরের অধীনেই জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। তাই দেশটিতে তারকা মর্যাদা আছে তাঁর। বাংলাদেশেও চারপাশে তাঁর চেনামুখ। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই হৃদ্যতা রয়েছে হোয়াটমোরের। এমনকি সংবাদকর্মীদের দেখভালে ব্যস্ত কর্মী সোৎসাহে চা এগিয়ে দিলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন,‘বুলু, এখন না, পরে।’ পরে সময় সুযোগ পেলে প্রয়াত মাঞ্জারুল ইসলাম রানার বাড়িতেও যেতে চান ডেভ হোয়াটমোর।