পরকীয়ার জেরে ঠাকুরগাঁওয়ের মিলিকে হত্যা: সিআইডি

আপডেট: February 22, 2025 |
inbound4409302518123838011
print news

জাহাঙ্গীর আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের ‘প্রারম্ভিক কিন্ডারগার্টেন’ এর স্কুলশিক্ষিকা সান্তনা রায় মিলি চক্রবর্তী (৪৫) হত্যা চাঞ্চল্যকর মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি পুলিশ। পরকীয়ার জেরেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান সিআইডি।

তিন বছর সাত মাস পর বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রæয়ারি) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত শেষে মিলি চক্রবর্তীর স্বামী, ছেলেসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে ঠাকুরগাঁও সদর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল আমলি আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক জামাল উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রæয়ারি) রাত ৮ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির এএসপি সুমিত চৌধুরী।

আসামিরা হলেন, মিলি চক্রবর্তীর স্বামী সমির কুমার রায়, ছেলে রাহুল রায়, সমিরের ভাইয়ের ছেলে স্বপন কুমার রায় ওরফে মানিক ও মিলির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সোহাগ।

ঠাকুরগাঁওয়ের সিআইডির এএসপি সুমিত চৌধুরী জানান, আমিনুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ান স্কুলশিক্ষিকা সান্তনা রায় মিলি চক্রবর্তী।

তারা দুজনে মোবাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে বার্তা আদান-প্রদান করতেন। আর মিলির ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড তার ছেলে রাহুল রায় জানতেন।

তাতে রাহুল রায় তার মায়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারেন ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের বার্তা, ছবিসহ ভিডিও দেখে ফেলেন।

পরে এ বিষয়টি তার স্বামীও জেনে যান। ঘটনার দিন (২০২১ সালের ৮ জুলাই) মিলির সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়।

একপর্যায়ে তাকে মারধর ও বুকে আঘাত করলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর রাত ৩টার দিকে তাকে ঘর থেকে বের করে বাইরে নিয়ে যান তারা।

পথে বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী জিজ্ঞাসা করলে স্বামী ও ছেলে জানান, অসুস্থ হওয়ায় মিলিকে তারা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন।

এরপর তাকে হাসপাতালে না নিয়ে সমির,স্বপন কুমার রায়, রাহুল রায় পরামর্শ করে বাড়ির পাশের একটি গলিতে কেরোসিন ঢেলে মিলির শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।

ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী মৃত্যুরপূর্বে মিলিকে মাথায় ও বুকে আঘাত করা হয় পরে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এএসপি সুমিত চৌধুরী আরও জানান, ২৪ সালের ৫ আগষ্টের আগে হত্যাকারীরা এই মামলার তদন্ত কার্যক্রমে প্রভাব খাটিয়েছিল তাই প্রতিবেন দাখিল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরেছিল।

তবে ৫ আগষ্টের পর মামলার তদন্তে কোনরকম প্রভাব ছিল না। এটাতো কোন রাজনৈতিক মামলা নয়। এটা পারিবারিক ও ব্যক্তিগত একটি বিষয়।

আমিনুল ইসলাম সোহাগ যে দল-ই করুক সেটি বিষয় না। এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমিনুল ইসলাম সোহাগের সাথে পরকীয়র জের ধরে এই হত্যাকান্ড।

পরিবার বাদি না হওয়ার বিষয়ে এএসপি সুমিত চৌধুরী জানান, ২০২১ সালের ৮ জুলাই শহরের মোহাম্মদ আলী সড়কে নিজ বাসার পাশে থেকে সান্তনা রায় মিলি চক্রবর্তীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তবে আশ্চর্যের বিষয় তার বাবা ও স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা বলা হলেও তারা কোন মামলা করেননি। ফলে দু’দিন পর  এ ঘটনায় ১০ জুলাই ঠাকুরগাঁও থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

এ মামলায় মিলির স্বামী সমির কুমার রায় ও সমিরের ভাতিজা স্বপন কুমারকে গ্রেফতার করা হয়। তার ছেলে রাহুল রায় ও আমিনুল ইসলাম সোহাগ বর্তমানে জামিনে আছেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর