জাপান যেসব কারণে ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল’

আপডেট: April 16, 2020 |
print news

পশ্চিমের দেশগুলোয় ঊর্ধ্বগতিতে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এশিয়া (চীনের উহান শহর) থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লেও এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর পরিস্থিতি গুরুতর। তবে বিস্তার থেমে নেই এশিয়াতেও।

কয়েক সপ্তাহ আগে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি আঘাত হানে। তবে কিছু দেশ কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে ভাইরাসটির বিস্তৃতি নিয়ন্ত্রণ করে প্রশংসা কুড়িয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় জাপানের কথা। চীনে করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই আঘাত হানা দেশ জাপানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মাত্র ৮ হাজারের মতো। মৃত্যুবরণ করেছে দেড়শ’র কাছাকাছি।

সকলের প্রশ্ন করোনাভাইরাসে জাপানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কেন এত কম? জাপানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ গুলো হচ্ছে;

জাপানিজরা জাতিগতভাবে খুবই কনজারভেটিভ, এরা কখনও কাউকে জড়িয়ে ধরে না, এমনকি হ্যান্ডসেক পর্যন্ত করেনা। কেবলমাত্র মাথা নুইয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়।

জাপানিজদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অনেক ভালো, পরিমিত শারীরিক ব্যায়াম এবং নিয়মিত সুষম খাদ্যাভ্যাসের কারণে।

জাপানে প্রতি বছর জানুয়ারির শেষের দিক থেকে একেবারে মে মাস পর্যন্ত ফুলের রেনু থেকে একধরনের সর্দি-কাশি হয়। এই সর্দিকাশি থেকে বাঁচার জন্য এই সময়ে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে।

জাতি হিসেবে খুবই আনুগত্যশীল, সরকার থেকে কোন দিক নির্দেশনা এলে অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করে।

করোনা মোকাবেলায় জাপানিজদের কৌশল;

জাপান যে কোনো পরিস্থিতিতে কোন ব্যবস্থা নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিভাগের যারা বিশেষজ্ঞ তাদের গবেষণা ও মতামতের ভিত্তিতেই কেবল ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।

সামাজিক দূরত্বঃ জাপানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণা করে দেখেছে একজন অপরজন হতে ৬ ফুট দূরত্বে অবস্থান করলে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো সম্ভব।

ঘন ঘন হাত ধোঁয়া ও মাস্কের ব্যাপক প্রচলন: হাত ধূতে বেশি পরিমাণ সাবান ব্যবহার করতে হবে। কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ড সময় নিতে হবে হাত ধূতে। অপরিচ্ছন্ন হাত দিয়ে নাকে-মুখে বা কপালে স্পর্শ করা যাবে না।

প্রতিবার মাস্ক পরিবর্তনের পরে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আরেকটা গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে সারজিক্যাল মাস্ক, কাপড় বা কাগজের মাস্কের তুলনায় করোনা প্রতিরোধে দ্বিগুণের ও অধিক কার্যকর।

জনসমাগম এড়িয়ে চলা: একটি বন্ধ ঘরে দশের অধিক মানুষ থাকলে তাদের কথা বলা বা হাঁচি কাশির মাধ্যমে যে ছোট ছোট কণা বের হয় তা রুমের অন্যান্যকে ও সংক্রমণ করতে পারে, কেননা ২০-৩০ মিনিট পর্যন্ত তা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। তবে মাস্ক ব্যবহার করলে এবং রুমে বাতাস প্রবাহের ব্যবস্থা থাকলে সেই আশংকা অনেকাংশেই কমে যায়।

পরিচ্ছন্নতা: একেকটি করোনা ভাইরাসের ব্যাস ৫০-২০০ ন্যানোমিটার হয়ে থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশিতে যে কণা গুলো বের হয়, তা মেঝে বা আসবাবপত্রের উপর জমা থাকে। সাধারণ তাপমাত্রাতে ভাইরাসগুলো ৯-২৮ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। সে জন্য মেঝে বা আসবাবপত্রের উপরিভাগ জীবাণু নাশক বা সাবান পানি দিয়ে নিয়মিত পরিস্কার রাখা জরুরী।

বৈশাখী নিউজএপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর