৭৫’র খুনীরা জাতীয় চার নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে : দীপু মনি

শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, ৭৫’র খুনীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথমে সপরিবারে এবং পরে জাতীয় চার নেতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড : বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনার ও ইনস্টিটিউটে এমফিল লিডিং টু পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তিকৃত নতুন গবেষকদের গবেষণা পরিচিতি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জাতীয় চার নেতাকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে কুচক্রীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধকে দূর করে আমাদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ছিল। ঘাতকেরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার এবং তার মতাদর্শের কেউ বেঁচে থাকলে তাদের হীন উদ্দেশ্য সফল হবে না। তাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঘাতকেরা এই চার নেতাকে টার্গেট করে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনার ব্রজলাল কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ আতিকুজ্জামান।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, কিছু মৃত্যু দিয়ে ইতিহাসের পরিবর্তন হয়ে যায়, কিছু মৃত্যু একটি দেশের পরিবর্তন করে দেয়, কিছু মৃত্যু ভিন্ন এবং সেই মৃত্যুর সাথে যারা জড়িয়ে থাকে তাদেরকে একটু ভিন্নভাবে স্মরণ করাটা কষ্টদায়ক। চার নেতাসহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে যারা তারা এই বেদনার মর্মার্থ বুঝতে পারে না।

বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে স্বপ্ন দেখতেন বঙ্গবন্ধু এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি স্বার্থন্বেষীমহল সমাজতন্ত্র মেনে নিতে পারেনি। সবাইকে নিয়ে একটি বৈষম্যহীন দেশ হবে এটা যারা সকলে মিলে একটা সমাজ হবে, সবাই তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। এটা মেনে নিতে চায়নি তারা। জাতীয়তাবাদের প্রশ্ন এসেছে বারবার। প্রশ্ন তুলেছে অস্তিত্ব নিয়ে কিন্তু বাঙালি মেরুদণ্ড সোজা করে দেশের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমান প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম পরিবার, সমাজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। একটি বিশেষ গোষ্ঠি সাম্প্রদায়িক হামলায় কিশোরদেরকে ব্যবহার করছে। এসব বন্ধে আমাদের অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকগুণসম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে উপযুক্ত সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকদের ভূমিকা মুখ্য।

বক্তারা বলেন, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র জাতিকে মেধাশুন্য করতে চেয়েছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশটাকে পাকিস্তানের আদর্শে তৈরি করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তাতে সফল হয়নি।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি