২০২২ সালেই মহামারির সমাপ্তি সম্ভব: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
আগামী ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই করোনা মহামারির অবসান হওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসস। বিশ্বজুড়ে টিকা বণ্টনে যদি ন্যূনতম সমতা রক্ষা করা গেলেই এমনটা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
২২ ডিসেম্বর, বুধবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচও কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসস বলেন, যদি বিশ্বের প্রতিটি দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে করোনা টিকার দুই ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে সামনের বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই মহামারির অবসান হওয়া সম্ভব। যদি আমরা সত্যিই মহামারির অবসান চাই, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের টিকা বণ্টনে অসাম্য দূর করতে হবে।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক আরো বলেন, আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩ লাখেরও বেশি মানুষ। আগের বছর, ২০২০ সালে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মায় বিশ্বে যত মানুষ মারা গিয়েছিলেন, এই সংখ্যা তার থেকেও বেশি। কিন্তু তারপরও আমি বলব, ২০২১ সালে করোনায় প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ, আমাদের হাতে রয়েছে কেবল সরকারি তথ্য এবং বিশ্বের সব দেশেই (করোনায়) এমন লাখ লাখ মৃত্যু হয়েছে- যেগুলো সরকারি নথিতে আসেনি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধকারী নোভাভ্যাক্সের টিকা জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সম্প্রতি নোভোভ্যাক্স টিকাকে ছাড়পত্র দিয়েছি। এটি ডব্লিউএইচওর ছাড়পত্র পাওয়া নবম টিকা। আশা করছি, এই অনুমোদনের মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোকে টিকা সহায়তা দেওয়ার জন্য আমাদের যে প্রকল্প চালু আছে, সেই কোভ্যাক্স প্রকল্প আরও সমৃদ্ধ হবে।
এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান নির্বাহী জানান, মহামারি শুরুর পর থেকে আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের হার সর্বনিম্ন থাকলেও এই ভাইরাসটির সর্বোচ্চ সংক্রামক ধরন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রভাবে প্রতিদিন আফ্রিকার দেশগুলোতে হু হু করে বাড়ছে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
২০২০ সালে মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের যেসব অঞ্চলে সংক্রমণ সবচেয়ে কম হয়েছিল- সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল আফ্রিকা। কিন্তু ওমিক্রনের প্রভাবে সেই চিত্র বদলে গেছে। গত এক সপ্তাহে বিশ্বের যেসব অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে, সেসবের মধ্যে বর্তমানে চতুর্থ স্থানে আছে আফ্রিকা।
বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বাজারে আসার পর থেকেই করোনা টিকা বণ্টনে অসাম্যের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডব্লিউএইচও। সংস্থার পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে, বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি যেখানে করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, সেখানে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ডোজের অভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরুই করতে পারেনি।