পাকিস্তানে ভয়াবহ তুষারপাতে শিশুসহ নিহত ২১

আপডেট: January 8, 2022 |

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তুষারপাত দেখতে গিয়ে নিজেদের গাড়িতে আটকে পড়ে মারা গেছেন অন্তত ২১ পর্যটক। কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক লাখ পর্যটক রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ৬৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বের মুরে এলাকায় গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া তুষারপাত দেখতে যায়। সেখানে হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় প্রায় হাজার খানেক গাড়ি আটকে পড়ে বরফে। গাড়িতে আটকে পড়ে ওই ২১ পর্যটকের মৃত্যূ হয়েছে বলে নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ এক ভিডিওবার্তায় বলেন, গত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এত পর্যটক একসঙ্গে ওখানে যায়নি। প্রায় এক হাজার গাড়ি ওই হিল স্টেশনে বরফে আটকে আছে। আমরা ধারণা করছি কমপক্ষে ২১ জন এ ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

kalerkanthoএর মধ্যেই উদ্ধার অভিযানে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন। তাদের সহযোগিতায় তলব করা হয়েছে সেনা ও প্যারামিলিটারি- জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুক্রবার থেকে ওই এলাকায় যাওয়ার সব পথ বন্ধ করে নতুন কোনো পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

পর্যটকদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইটে লেখেন, বিষয়টি নিয়ে জোরদার তদারকি চলছে। কিভাবে এমন একটি দুঃখজনক দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে এর মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী নতুন কোনো পর্যটককে ওই এলাকা ভ্রমণ না করতে অনুরোধ করেছেন।

kalerkanthoগত মঙ্গলবার থেকে পাকিন্তানের ওই অঞ্চলে তুষারপাত শুরু হয়। নয়নাভিরাম সেই দৃশ্য দেখতে মানুষ সপরিবারে ওখানে যেতে থাকে। এভাবেই ওই এলাকা একসময় জনারণ্যে পরিণত হয়। অনেকে হিল স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছাতেও পারেননি, ভিড়ে আটকে ছিলেন রাস্তায়।

স্থানীয় মিডিয়া জানাচ্ছে, কমপক্ষে এক লাখ গাড়ি নিয়ে তুষারপাত দেখতে ওই এলাকায় হাজির হয় মানুষ। সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়- শিশুসহ পুরো পরিবার গাড়ির ভেতর মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আর তাদের গাড়িটি পুরো বরফে ঢাকা।

kalerkantho

মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডা. ফাহিম ইউনুস বলেন, ঠাণ্ডা বা কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে। কার্বন মনোক্সাইড গন্ধহীন ও প্রাণঘাতী। যদি গাড়িটি বরফে ঢেকে যায় তবে এটির সাইলেন্সার আটকে যাবে। আর এতেই নিঃশ্বাসে কার্বন মনোক্সাইড গ্রহণের কারণে খুব সহজেই মৃত্যু হতে পারে যাত্রীর।

তবে শুধু ‘বরফে আটকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে’ ব্যতীত আর কোনো মন্তব্য এখনো আসেনি পাকিস্তানের জরুরি উদ্ধার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। সূত্র : দ্য পেনিনসুলা, বিবিসি, দ্য ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর