ঐশ্বরিয়ার জন্য মরিয়া হলিউড নির্মাতা হার্ভে উইনস্টেইন!

আপডেট: March 18, 2022 |

তাকে বলা হয় সর্বকালের সেরা মিস ওয়ার্ল্ড। তার সৌন্দর্যকে তুলনা হয় অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে, সেই বিতর্কেও তার পক্ষের ভক্তরা জিতিয়ে দেন তাকে। তিনি আর কেউ নন, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন।

‘মিটু’ নিয়ে যখন লাজ-লজ্জা দূরে ঠেলে হলিউড-বলিউড সরব, তখন আন্দোলনকারীদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। যদিও নিজের কোনও খারাপ অভিজ্ঞতার কথা তখন প্রকাশ্যে জানাননি। অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন বচ্চন পরিবারের একজন হয়ে ওঠা ঐশ্বরিয়াকে হয়তো কু প্রস্তাব দেওয়া তত সহজ ছিল না। কিন্তু ধারণাটি যে পুরোপুরি ঠিক নয়, তা সম্প্রতি জানা গেল ঐশ্বরিয়ার এক প্রাক্তন ম্যানেজারের বয়ানে।

ঐশ্বরিয়ার ওই ম্যানেজারের নাম সিমন শেফিল্ডস। আন্তর্জাতিক সিনেমায় ঐশ্বরিয়ার যাবতীয় কাজের দেখাশোনা করতেন সিমন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, ঐশ্বরিয়ার জন্য এক সময় মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন হলিউডের পরিচালক হার্ভে উইনস্টেইন। এ ব্যাপারে সরাসরি প্রস্তাবও রেখেছিলেন সিমনের কাছে।

হার্ভে হলেন হলিউডের সেই খ্যাতনামা পরিচালক, যাকে ঘিরেই হলিউডের ‘মিটু’ আন্দোলনের সূত্রপাত। হলিউডের প্রথম সারির সব অভিনেত্রী এক যোগে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছিলেন হার্ভের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিদের মধ্যে ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, গিনেথ প্যালট্রো, জেনিফার লরেন্সের মতো অভিনেত্রী। বস্তুত, তারপর থেকে হার্ভেকে হলিউডের ‘সেক্সুয়াল প্রিডেটর’ বা যৌন হেনস্থাকারী বা যৌন শিকারি তকমাও দেওয়া হয়।

সেই হার্ভের সঙ্গে ঐশ্বরিয়ার দেখা হয়েছিল কী ভাবে? কবে? সিমন জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন ঐশ্বরিয়া। তখন তিনি বিবাহিতা। সঙ্গে ছিলেন স্বামী অভিষেক বচ্চনও। বিদেশে তখন বেশ কিছু কাজের প্রস্তাবও আসতে শুরু করেছিল ঐশ্বরিয়ার কাছে। মাঝে মধ্যেই কাজের প্রয়োজনে হলিউডের ‘সদর শহর’ লস অ্যাঞ্জেলেসে আসছিলেন তিনি। সেই সময়েই বেশ কয়েকবার ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন হার্ভে। ম্যানেজার হিসেবে ওই সব বৈঠকে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গেই থাকতেন সিমন। তিনি জানিয়েছেন, বহুবার হার্ভে তাকে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সিমন ইচ্ছে করেই সেই সব ইঙ্গিত বুঝতে চাননি।

একবার তেমনই একটি বৈঠকে ঐশ্বরিয়ার চোখের আড়ালে সিমনকে একা পেয়ে চেপে ধরেন হার্ভে। সিমন জানিয়েছেন, হার্ভে তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন, ঐশ্বরিয়াকে একা ঘরে পেতে হলে তাকে কী করতে হবে? জবাবে সিমন যা বলেছিলেন, তার সবটা তিনি প্রকাশ্যে জানাতে পারেননি। বলেছিলেন, সেগুলো ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করা অনুচিত। তবে সিমন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর গ্রাহককে ছোঁওয়ার কোনও সুযোগই তিনি দেবেন না হার্ভেকে।

সে দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হলিউডের পরিচালককে ‘শূকর’ বলে উল্লেখ করে সিমন বলেছেন, ‘‘ঐশ্বরিয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ও যা করছিল, তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এমনকি, আমাকেও আমার কেরিয়ার নিয়ে হুমকি দিতে ছাড়েনি হার্ভে।’’

বদলা নিতে সে দিন হোটেলে ফিরে হার্ভেকে একটি শূকরের খাবার স্টিলের পাত্র পাঠিয়েছিলেন সিমন। তাতে ভরে দিয়েছিলেন ডায়েট কোক। সাধারণ ভাবে পুষ্টি নিয়ন্ত্রণ করে খাওয়া দাওয়াকে ডায়েট বলা হয়। সিমনও সম্ভবত হার্ভেকে তার ‘খিদে’ নিয়ন্ত্রণের বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন।

ঐশ্বরিয়া কি ব্যাপারটা জানতেন? না কি তিনি এর কিছুই টের পাননি? সিমনের সাক্ষাৎকারে তার জবাব পাওয়া যায়নি। ঠিক যেমন সিমনের এই দাবির পরও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ঐশ্বরিয়াও।

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর