মিয়ানমারের শরণার্থী ফেরত দিচ্ছে থাইল্যান্ড

আপডেট: April 8, 2022 |

মিয়ানমারের এক তরুণী ও তার পরিবার এখন থাইল্যান্ডের সীমান্তের একটি নদীর তীর ঘেঁষে বড় বড় ঘাসের মধ্যে বাস করছেন। তারা এমন এক অবস্থায় আটকা পড়েছেন যেখানে একটি দেশ তাদের রাখতে চায় না এবং অন্য দেশটির সামরিক বাহিনী তাদের হত্যা করতে পারে।

গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর চরম সহিংস পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষের মতো হে’ও তার গ্রাম ছেড়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাইল্যান্ডের দিকে একটি নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে চলে যান, তবে সেখানেও নিরাপদ আশ্রয়ের অস্তিত্বও নেই।

মিয়ানমারে ফিরে গেলে হে ও তার পরিবারের সামনে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। তা সত্বেও থাই কর্তৃপক্ষ – মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর সাথে তাদের সম্পর্ক খারাপ না করার বিষয়ে সতর্ক। তিনি বলেন, সে জন্যই তারা সপ্তাহে অন্তত একবার তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে।

দুটি দেশকে বিভক্ত করেছে মোই নদী তারই ধারে হালকা পাতলা একটি তাঁবুতে বাস করেন হে, তিনি বলেন “যখন তারা আমাদের ফিরে যেতে বলেছিল, তখন আমরা কান্নাকাটি করেছিলাম এবং সবিস্তারে বলেছি কেন আমরা আমাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারি না।

হে বলেন, “মাঝে মাঝে আমরা নদী পার হয়ে মিয়ানমারের দিকে যাই কিন্তু কখনই আমি আর গ্রামে ফিরে যাইনি।”

যদিও আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন অনুযায়ী, যেসব দেশে শরণার্থীদেরজীবন বিপন্ন হতে পারে সেসব দেশে তাদের ফেরত পাঠানো নিষিদ্ধ। ৱ

এ সত্বেও থাইল্যান্ড মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক ক্রমবর্ধমান সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে।

আর এর ফলে হে এবং মিয়ানমারের অন্যান্য উদ্বাস্তুরা নদীর দুই পাড়েই অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে কারণ তাদের নিজ গ্রামের সহিংস পরিস্থিতি কখনও চরম আকার নেয় আবার কখনও স্তিমিত হয়ে পড়ে।

দ্য বর্ডার কনসোর্টিয়াম দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের শরণার্থীদের খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য সহায়তা দানকারী প্রধান সংস্থা। ঐ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক স্যালি থম্পসন বলেছন, “এটা পিংপং খেলার মত ।” তিনি বলেন, “আপনি সীমান্তের এপার ওপার ঘুরে বেড়াতে পারবেন না। আপনাকে এমন কোথাও থাকতে হবে যেখানকার অবস্থা স্থিতিশীল… আর এই মুহূর্তে মিয়ানমারে কোনো স্থিতিশীলতা নেই।

গত বছর ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ১হাজার ৭’শ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। ১৩ হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছে এবং পরিকল্পিতভাবে শিশু, নারী ও পুরুষদের নির্যাতন করেছে।

থাইল্যান্ড জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরদানকারী দেশ নয়। মিয়ানমারের শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় তাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার উপর তারা জোর দিয়েছে।

থাইল্যান্ড আরও জোর দিয়ে বলেছে যে তারা সমস্ত আন্তর্জাতিক শরনার্থী আইন মেনে চলছে যা নির্দেশ দেয় যে মানুষকে এমন কোনও দেশে ফিরিয়ে দেয়া উচিত নয় যেখানে তারা নির্যাতন, শাস্তি বা ক্ষতির মুখোমুখি হবে।

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর