টি-২০ কোচের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি মেনে নিয়েছেন ডোমিঙ্গো

আপডেট: August 23, 2022 |

২০১৯ সালের আগস্টে বাংলাদেশ দলের হেড কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো এক বছরের জন্য। পরবর্তীতে দুই মেয়াদে চুক্তি বেড়েছে তার। ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবেন এই দায়িত্বে।

তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন গত তিন বছর। টেস্ট, ওয়ানডের পাশাপাশি টি-২০-তে কোচের দায়িত্বটা ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পালন করার কথা ছিল তার।

তবে তার টি-২০ কোচিং দর্শনে বিসিবি সন্তুষ্ট নয় বলে এই ফরম্যাটে বিসিবি দলকে দেখভালের জন্য টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট নিযুক্ত করেছে। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার এবং অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের কোচিং স্টাফে ৬ বছর যুক্ত থাকা শ্রীধরণ শ্রীরামকে দিয়েছে বিসিবি এই দায়িত্ব। এশিয়া কাপ মিশন থেকে শুরু হচ্ছে তার অ্যাসাইনমেন্ট। টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকবেন এই দায়িত্বে।

টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দলের পারফরমেন্সের গ্রাফ সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে অবনমন হওয়ায় টি-২০র কোচের পদ থেকে রাসেল ডোমিঙ্গোকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাটিং কনসালটেন্ট শ্রীধরণ শ্রীরামকে উড়িয়ে এনে তার সঙ্গে ডোমিঙ্গোকে বসিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন।

এখন থেকে রাসেল ডোমিঙ্গো শুধুই টেস্ট এবং ওয়ানডে দলের কোচ। কোচিং ক্যারিয়ারে এমন একটা ধাক্কা পেয়ে যার বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার কথা, সেই ডোমিঙ্গো সব কিছু স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েছেন।

নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ডোমিঙ্গো- ‘আমি মনে করি ধারণাটা দারুণ। টেস্ট ম্যাচ এবং ৫০ ওভারের ম্যাচে ফোকাস দিতে পারব। টি-টোয়েন্টিতে আমাদের কিছু ম্যাচে ভালো করেছি, কিছু খারাপ করেছি। আমি মনে করি না টি-টোয়েন্টিতে নতুন কিছু অ্যাপ্রোচ করা খারাপ। এ ব্যাপারে আমি খুব উদার মনের। দলকে ভালো করার জন্যই আমি সব কিছুর জন্য প্রস্তুত।’

টি-২০ ’র কোচিং থেকে মুক্ত হওয়ায় আপাতত আগামী নভেম্বর পর্যন্ত ডোমিঙ্গোর নেই তেমন কোনো কাজ। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ফ্রেশ হয়ে ২০২৩ বিশ্বকাপের জন্য দলকে প্রস্তুত করার কাজে লেগে পড়বেন বলে সংকল্প করেছেন ডোমিঙ্গো- ‘৫০ওভারের বিশ্বকাপ আসছে। আমরা জানি টেস্ট দলের সঙ্গে অনেক কাজ করতে হবে। পরিবারের সাথে কিছুটা সময় কাটাতে পারব। গত বছর পাঁচ সপ্তাহ বাড়িতে ছিলাম। পারিবারিক জীবন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এটা টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন। ফ্রেশ হয়ে টুর্নামেন্টে ভালো মনোভাব নিয়ে আসা যাবে।’

বিসিকি চাইছে ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্সকে ডেভেলপম্যান্টের কাজে সম্পৃক্ত করতে। ব্যাটিং কনসালটেন্ট পদে তাই নতুন কাউকে নিতে হবে। এখানে একজনকে চাইবেন ডোমিঙ্গো। ২০২৩ বিশ্বকাপে চোখ ধাধানো পারফরমেন্সে চোখ তার-‘সবারই মতামত আছে। আমি আমার দর্শন জানি। আমি আমার কোচিং স্টাইল জানি। এটা নিয়ে খুব বেশি মন্তব্য জানা নেই।

টেস্ট এবং ওয়ানডের জন্য সামনে বেশ কিছু সময় আছে। আমি মনে করি দলে রদবদলের সম্ভাবনা আছে। জেমি ডেভেলপম্যান্ট নিয়ে জড়িত থাকার কথা বলছেন। ব্যাটিং কোচ হিসেবে আমি কাকে পেতে চাই সে সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। যখন তাকে পাওয়া যাবে না, তখন জেমিকে পাব। আগামী কয়েক মাসে আমাকে অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে৷ আমি সত্যিই মনে করি ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো সুযোগ আছে। আমাদের একটা ভালো খেলোয়াড়দের দল আছে।’

করোনা ভাইরাস উত্তর সময়ে প্রচুর ক্রিকেট, প্রচুর ব্যস্ততা। সেই ব্যস্ততা থেকে ছুটি পাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন ডোমিঙ্গো-‘অবশ্যই একটা বিরতি দরকার ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকালে শিখেছি যে, খেলোয়াড় এবং কর্মীদের জন্য মানসিক সতেজতা একটি বড় জিনিস। এটি এমন কিছু ছিল যা অতীতে এখানে বিবেচনা করা হয়নি। এই খেলোয়াড়রা অনেক ক্রিকেট খেলে, আমি যখন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ছিলাম তার চেয়েও বেশি।

মানসিক অবসাদ পারফরম্যান্সকে ডুবিয়ে দিতে পারে। আমাদের খেলোয়াড়দের একটি বড় দল থাকা দরকার, যাতে আমরা নির্দিষ্ট খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিতে পারি।’

ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে যেতে চান সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেখতে চান নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগ- ‘আমি ‘এ’ দলের হয়ে দুবাই সফরে যাব। আমাদের অনেক টেস্ট প্লেয়ার সেখানে খেলবে। তামিম, মুমিনুল, শান্ত এবং রাব্বি যারা কিছুদিন খেলার বাইরে থাকবে, তাদের জন্য দারুণ সুযোগ হবে। আমি নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এনসিএল দেখে সময় কাটাব। এগুলো আমার পরিকল্পনার অংশ।’

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর