চুরি করতে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে খুন

আপডেট: January 17, 2023 |

সোম মল্লিক, যশোর প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগরে ফরিদ গাজী (২৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারী দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার (১৬ জানুয়ারি) নিহতের ভাই ফারুক গাজী বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

নিহত ফরিদ গাজী উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামে মসজিদে আরাফাত সংলগ্ন রেলবস্তিতে বসবাস করতেন। তিনি খুলনার কয়রা উপজেলার অর্জুনপুর গ্রামের মৃত আফিল উদ্দিন গাজীর ছেলে।

আটক দুই হত্যাকারী হলেন, নড়াইল সদর উপজেলার যদুনাথপুর গ্রামের সাখাওয়াত মোল্যার ছেলে শান্ত (২১) ও তার বন্ধু একই গ্রামের ছবুর মোল্যার ছেলে সাকিব মোল্যা (২১)।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে অভয়নগর থানায় যশোর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) মুকিত সরকার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ফরিদ গাজী হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যে দুই হত্যাকারীকে আটক ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দুই বন্ধুর হাতে খুন হন ফরিদ গাজী।

তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুই যুবক ফরিদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। নিহত ফরিদের সঙ্গে জেলখানায় প্রথম পরিচয় হয় শান্তর। সেখানে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন তারা। ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর ফরিদের ডাকে কাজের সন্ধানে নড়াইল থেকে অভয়নগরে আসেন শান্ত ও তার বন্ধু সাকিব। তারা তিন বন্ধু মিলে উপজেলার নর্থ-বেঙ্গল এলাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন এবং জাহাজের স্কট হিসেবে কাজ শুরু করেন।

কিন্তু শান্ত ও সাকিবের উপার্জিত টাকা তাদের হাতে না দিয়ে ফরিদ নিজের কাছে রাখতে শুরু করেন। শান্ত ও সাকিব তাদের উপার্জিত টাকা ফরিদের কাছে চাইলে তিনি জানান হোটেলের খাওয়া বাবাদ কেটে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে শনিবার (১৪ জানুয়ারি) হত্যাকারী শান্ত ও সাকিব স্যালো মেশিন চুরির প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদকে ভৈরব সেতু সংলগ্ন দেয়াপাড়া গ্রামে সাহারা গ্রুপের সরিষা ক্ষেতে ডেকে নিয়ে যান।

ওই দিন সন্ধ্যায় শান্ত ও সাকিব একটি বার্মিজ চাকু দিয়ে ফরিদকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যাকাজে ব্যবহৃত চাকুটি বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলের পাশে মাটিতে পুঁতে রাখেন এবং রক্ত মাখা কাপড়গুলো ভৈরব নদীতে ফেলে দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান জানান, অভয়নগর থানা ও যশোর ডিবি পুলিশের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ফরিদের হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে নর্থবেঙ্গল এলাকায় অভিযান চালিয়ে শান্ত ও সাকিবকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ভৈরব সেতু সংলগ্ন শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দেয়াপাড়া গ্রামে সাহারা গ্রুপের সরিষা ক্ষেত থেকে ফরিদ গাজীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর