“দক্ষ কর্মীর দক্ষ দেশ, আরব দেশে বাংলাদেশ”

ছাত্র জীবন থেকে সরাসরি প্রবাসে গিয়ে আমার কর্ম জীবনের সুচনা। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে সৌদি আরবের মক্কায় আলরাজ্হী কমার্শিয়াল ফরেইন একচেন্জ ব্যাংকে আমার ব্যাঙ্কিং ক্যারিয়ারের শুরু। ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সকল স্তরের মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ বিদ্যমান। এই পেশায় আমার শিক্ষা গুরু ছিলেন বর্তমান জনতা ব্যাংক লিঃ প্রধান কার্যালয়ের আই সি টি বিভাগে কর্মরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কৃতি ছাত্র জনাব আলহাজ্ব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম সাহেব। ওনি শেরপুর জেলার নকলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ওনার কাছ থেকে এমন অনেক কিছু শিখেছি যাহা পাঠশালাতে রপ্ত করা হয়ে ওঠেনি।

এর পর আসা যাক আমার দেশের সম্ভাবনাময় মানবসম্পদের কথা। সে যেন এক স্বপ্ন জাগানো অভিজ্ঞতা। আমার কর্ম ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী কাস্টমার ছিল বাংলাদেশী। ওরা স্বদেশের প্রতি এবং নিজের পরিবারের প্রতি এত দায়িত্ববান ছিল যা অতুলনীয়। আমি যেহেতু বাংলাদেশি সে কারণে আমার কাউন্টারে সব সময় তাদের জ্যাম ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সে সময় সমগ্র মক্কা নগরী ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় চিত্র। আমার মনেই হতো না যে, এটি সৌদি আরব। বেশিরভাগ বাংলাদেশী তখন মক্কা মিউনিসিপ্যাল্টিতে কাজ করতো। যারা সাধারণ লেবার তাদের বেতন ছিল মাত্র ৩০০ সৌদি রিয়াল খাওয়া এবং থাকা ফ্রি। আমি দেখেছি এই অল্প বেতনে কাজ করা আমার দেশের হীরার ছেলেরা প্রতি মাসে দেশে পাঠাতো ৫০,০০০৷= টাকা বা আরো বেশী। কি করে সম্ভব? হে এই অর্থ তারা পরিশ্রম করে পাঠাতো।

তখনকার সময়ে আমি দেখেছি সৌদি আরবের প্রায় সকল কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের জয় জয়কার। সকল কাজে আমাদের দেশের মানুষ অত্যন্ত সৎ দায়িত্ববান এবং পরিশ্রমী। সৌদি আরবের প্রতিটি শহরেরই প্রাণ স্পন্দন ছিল এ দেশের মানুষ। যারা পরিশ্রম করে সৎ ভাবে চলে নিয়োগ কর্তারা সাধারণত তাদেরই বেশী পছন্দ করেন।

বাংলাদেশিদের এই সমীক্ষা শুধু সৌদি আরবে নয় পৃথিবীর প্রায় দেশেই আমাদের দেশের জন সম্পদের সুনাম বিস্তৃত।

প্রবাসে দেখেছি কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের অসাধারণ বিপ্লব, তেমনি ভাবে খাবার পরিবেশনে সাধারণ রেস্তরাঁ থেকে বিলাসবহুল হোটেল সর্ব ক্ষেত্রে এ দেশের মানুষের সুনাম অক্ষুন্ন। তাদের রেমিটেন্সের প্রবাহে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে বহুদূর।

তথ্য সূত্র: আমার প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে।

মোহাম্মদ রেজাউল করিম
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, বৈশাখী নিউজ২৪.নেট