আদানির বিদ্যুৎ আসবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে: নসরুল হামিদ
ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ মার্চের প্রথম সপ্তাহে আসবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
আজ রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
এসময় নসরুল হামিদ বলেন, আদানির বিদ্যুৎ মার্চেই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। দাম নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। এ বিদ্যুতের দাম পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে বেশি হবে না। এছাড়া আদানির দ্বিতীয় ইউনিট থেকে এপ্রিলে বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ।
নসরুল হামিদ জানান, আদানি গ্রুপ নিয়ে ভারতসহ বিশ্বজুড়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে যেসব কথা হচ্ছে, তার কোন ভিত্তি নেই। আমরা প্রতিযোগিতামূলক বাজার দরেই বিদ্যুৎ পাব। এ নিয়ে কোনো সংশয়ের সুযোগ নেই। মার্চে প্রথম ইউনিট থেকে আসবে ৭৫০ মেগাওয়াট। এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আসবে আরও ৭৫০ মেগাওয়াট।
তিনি বলেন, আসছে সেচ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আমাদের বেশকিছু কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। রামপাল এসেছে, এসএস পাওয়ার আসবে, বরিশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আসবে। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নিয়েছি, সেচ মৌসুম নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। স্পর্ট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি শুরু হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ বেড়ে যাবে। স্পর্ট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি আমদানির পরিকল্পনার রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি গ্রুপের পাওয়ার সংস্থার সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিপি)। সেই অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার প্রায় ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লানির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং বগুড়ায় পৌঁছবে সেই বিদ্যুৎ।
তবে ঝামেলা শুরু হয় কয়লার দাম নিয়ে। দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য বাংলাদেশ যে দরে কয়লা কিনেছে, আদানির কারখানায় টনপ্রতি কয়লার দর প্রায় ১০০ ডলার (৮ হাজার ২২৩ টাকা) বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাবে বিদ্যুতের দাম। এই অবস্থায় ‘নিউক্যাসেল সূচক’ অনুসরণ করে আমদানি করা কয়লার দাম নির্ধারণের জন্য আদানি গোষ্ঠীর কাছে বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।
এদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারে নাটকীয় পতন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো বাজার কারসাজি এবং জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত।
এমন অভিযোগ করার পর আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যদিও আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়’ বলে অভিহিত করেছে।