৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী করোনার ঝুঁকিতে

আপডেট: June 2, 2020 |
print news

বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের দাম বাড়ানো হলে এর ব্যবহার কমবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে।

মঙ্গলবার (২ জুন) তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্সের (আত্মা) যৌথ উদ্যোগে ‘কেমন তামাক কর চাই: বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক ওয়েবিনারে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘করোনা আমাদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করেছে। আমরা এ সুযোগে কল্যাণের পথ বেছে নেব। এক্ষেত্রে আমাদের তামাক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘যদি এবারের বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পরিবর্তন না আসে, এই বাড়তি ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সুযোগ আমরা হারাই, এত মৃত্যু, অসুস্থতা অব্যাহতই থেকে যায়, তাহলে আমি নৈতিকভাবে এই বাজেটকে সমর্থন করতে পারি না।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘ধূমপান কমাতে সিগারেটের স্তর সংখ্যা কমানোর বিকল্প নেই। আসন্ন বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর বিলুপ্ত করে দুটি নির্ধারণ করা দরকার। কারণ, একাধিক মূল্যস্তর এবং বিভিন্ন দামে সিগারেট ক্রয়ের সুযোগ থাকায় ভোক্তা স্তর পরিবর্তন করার সুযোগ পায়। ফলে তামাকের ব্যবহার হ্রাসে কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করে না।’

বিড়ির ওপর কর না বাড়ানোর পক্ষে সংসদ সদস্যদের চিঠি দেওয়া দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত।

সভায় ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য তামাক কর বিষয়ে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে-

সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা চারটি থেকে দুটিতে (নিম্ন এবং প্রিমিয়াম) নামিয়ে আনা, বিড়ির ফিল্টার ও নন-ফিল্টার মূল্য বিভাজন তুলে দেওয়া, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের (জর্দা ও গুল) দাম বাড়ানো এবং সব তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা।

আলোচকদের দাবি, তামাক-কর ও মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সম্পূরক শুল্ক এবং ভ্যাট বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এছাড়া, ৩ শতাংশ সারচার্জ থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় সম্ভব হবে।

তামাকপণ‌্যের দাম বাড়ালে দীর্ঘমেয়াদে ৬ লাখ ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং প্রায় ২০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। একইসাথে করোনার মতো যেকোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর