নির্বাচন যেন হাস্যকর না হয়: কুবি’র সাদা দল

আপডেট: November 28, 2022 |
print news

এমদাদুল হক, কুবি প্রতিনিধি: আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে উদ্দেশ্যমূলক ও গঠনতন্ত্র বিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু পরিষদ। এরপর এই নির্বাচনের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে ১০৬ জন শিক্ষক। এবার এই নির্বাচনকে নিয়ে বিএনপি-জামাতপন্ত্রী সাদা দল তাদের বক্তব্য প্রদান করেছে।

রবিবার (২৭ নভেম্বর) সাদা দলের অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান স্বাক্ষরে এ বক্তব্য দেয়া হয়।

বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মেধা ও মননের চর্চা হয় সেখানে এ ধরণের কর্মকান্ড দুঃখজনক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল মনে করে পাঁচটি বিষয় পর্যবেক্ষণে এনে একটি গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

সেগুলো হলো- পর্যাপ্ত সময় না রেখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, নির্বাচনে ভোটার বাড়ানোর প্রবণতার পূর্বেও যা লক্ষ্য করা গেছে নির্বাচনকে ঘিরে এই ধরণের ইকুয়েশন থাকলে তা দুঃখজনক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল সেই ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালন করে প্রতিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে থাকে, দেশে গণতন্ত্র বিপর্যস্ত কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র চর্চা বন্ধ হোক তা কাম্য নয়, শিক্ষকদের একটি বড় অংশ নির্বাচনে আসছে না যা জাতির ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতন্ত্র চর্চার জন্য খারাপ নজির। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের অন্যতম একটি দায়িত্ব হলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা। অতএব, নির্বাচনে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট ও হাস্যকর না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল আহবান জানাচ্ছি

সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. জি এম মনিরুজ্জামান বলেন, তারা অভিযোগ তোলা বা বক্তব্য দিতেই পারে। ১০৬ জন শিক্ষকের কেউই যেহেতু নির্বাচন করবেন না বলে নাম তুলে নেন নি, তাহলে কোনো সমস্যাই হবার কথা নয়। যথাসময়েই নির্বাচন হবে।

এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু পরিষদ ১ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্র বিরোধী আখ্যা দিয়ে প্রেস বিজ্ঞতি দেয়। সেখানে নতুন নির্বাচনের তারিখ দেয়ার দাবি করা হয়। এছাড়া সম্প্রতি শিক্ষকদের বার্ষিক সম্মেলনের আয়-ব্যয়ের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বর্তমান শিক্ষক সমিতির সভাপতি দুলাল চন্দ্র নন্দীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে পরিষদ। এছাড়া ১০৬ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরে বর্তমান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরাবর দেয়া অনাস্থাপত্রেও একই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঐ চেক বা চেকের টাকা তো আমাদের ব্যক্তিগত ভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। আর এখন যে অভিযোগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিষদ দিয়েছে সেটাও ভুয়া।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর বন্যাদুর্গতদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ অনুদান প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা ও শিক্ষক সমিতির মানবিক কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে তৎকালীন প্রক্টর ড. কাজী কামাল উদ্দিন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. দুলাল চন্দ্র নন্দীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এই কারনে সেই বারের শিক্ষক সমিতির নির্বাচন পিছিয়ে পরের বছরের ১১ জানুয়ারি নেয়া হয় এবং অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ভোটাধিকার ক্ষমতা হারান। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক সেই বছরের জানুয়ারিতে ভোটাধিকার চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করলে তা খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর যোগদানের পর শিক্ষকদের মাঝে সমঝোতার মাধ্যমে ভোট দেয়ার অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হলেও মূল বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর