ফেনীতে সৎ বাবার বিরুদ্ধে শিশু হত্যার অভিযোগ


ফেনী জেলা প্রতিনিধি: ফেনী পৌরসভার একাডেমি (বকুলতলা) এলাকায় সৎ বাবার বিরুদ্ধে তানজিনা আক্তার (হামিদা) নামের ২ বছরের শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বকুলতলা এলাকার ওবায়দুল হকের কলোনিতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানান, রিক্সা চালক জীবন মিয়া (২৮) ও তার স্ত্রী জোহরা বেগম বিউটি এক কন্যা শিশু নিয়ে বকুলতলা এলাকার ওবায়দুল হকের কলোনিতে গত ৫ দিন ধরে ভাড়া বাসায় থাকছেন।
তানজিনা আক্তার হামিদা (২) বিউটির আগের সংসারের সন্তান।
শুক্রবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে শোর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা জীবন-বিউটির ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখতে পান শিশু কন্যা হামিদার নিথর দেহ পড়ে আছে।
এসময় বিউটি কান্না করতে করতে বলতে থাকে জীবন আমার মেয়েকে মেরে পেলছে।
বিউটির দাবি নিজের সন্তান না হওয়ায় তার স্বামী হামিদাকে সহ্য করতে পারতো না। প্রায়ই তাকে মারধোর করতো। ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে হামিদা কয়েকবার বমি করে।
অতিরিক্ত বমিতে হামিদার শরীর ভিজে গেলে জীবন মেয়েকে কলপাড়ে নিয়ে যায় পরিষ্কার করতে। তখন আমি ঘরের মেঝেতে পড়া বমি পরিষ্কার করছি।
কিছুক্ষণ পর জীবন আমার মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসে। ঘরে আনার পর মেয়ে কোন কথাই বলছে না এক বারে নিস্তেজ হয়ে আছে৷
মেয়ের কপালে কালো দাগ দেখে আমি জীবনকে জিজ্ঞেস করলাম মেয়ে কোন কথা বলছে না কেন? তখন জীবন আমাকে বলে তোর মেয়ে বেশিদিন বাঁচবে না!
আমার ধারণা কলপাড়ে নিয়ে সে আমার মেয়েকে কোন জখম করে হত্যা করেছে।
কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠলে অভিযুক্ত রিক্সা চালক পালিয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে ধরে মারধোর করে পরে ফেনী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হামিদার লাশ উদ্ধার লরে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
অভিযুক্ত জীবন মিয়াকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত জীবন মিয়া বলেন, হামিদা বমি করতে থাকলে আমি তাকে কলপাড়ে নিয়ে পরিষ্কার করে পানি খাওয়াইছি এতটুকুই শুধু। এরপর সে দূর্বল হয়ে যায়। আমি তাকে মারিনি।
বিউটি ও জীবন ৫ দিন পূর্বে ফেনীতে এসেছে ভাড়া বাসায় উঠেন। এর আগে বিউটি শিশু কন্যা হামিদাকে নিয়ে চট্টগ্রামে মায়ের সাথে থাকতেন।
সেখানে ৭ দিন পূর্বে রিক্সা চালক জীবনের সাথে তার বিয়ে হয়। এরপর তারা প্রথমে ঢাকা ও পরে ফেনীতে চলে আসেন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, একাডেমি এলাকায় বকুলতলা নামক স্থানে একটা কলোনি থেকে সৎ বাবা কর্তৃক শিশু সন্তান হত্যার অভিযোগে পিতা জীবন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
নিহত শিশুর মায়ের দাবি জীবন মিয়া তার শিশু সন্তান হামিদাকে হত্যা করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর আসল কারণ বলা যাবে।