গাজীপুরে মারধরের ভিডিও করায় যুবককে পেটালেন ইউপি সদস্য (ভিডিওসহ)

আপডেট: August 2, 2022 |

মাছুদ পারভেজ,গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সদর উপজেলার বি কে বাড়ি সিটপাড়া এলাকায় মুরগী চুরির অভিযোগে এক যুবককে পেটানোর সময় ভিডিও ধারণ করার অপরাধে ভিডিও ধারণকারী সেই যুবককেও পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

গত শুক্রবার বিকেলে এক শালিসে লোকজনের উপস্থিতিতে মুরগী চুরির অভিযোগে এক যুবককে পেটানোর দৃশ্য ভিডিও ধারণ করা কালে দেখে ফেলায় ওই ওই ইউপি সদস্য ভিডিওধারণকারী যুবককে পেটানো শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দোকানী জানান, দুই যুবককে পেটানো গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রাশেদুল হক।

২৯ জুলাই শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চুরির অভিযোগে করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

মুরগি চুরির অপবাদ দেওয়া সাইদুল হক সিটপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেনের ছেলে সাইদুল হক। ভিডিও ধারণ করা যুবক হলো একই এলাকার জুয়েল।

বিকেবাড়ি (সিটপাড়া) এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউপি সদস্য রাশেদুল শুক্রবার বিকেলে বিকেবাড়ি (সিটপাড়া) এলাকার একটি খোলা মাঠে মোবারক হোসেনের ছেলে সাইদুলকে ধরে নিয়ে আসে। পরে ওই যুবককে মুরগি চুরির অভিযোগে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। ওই মারধোরের দৃশ্য উপস্থিত এক যুবক ভিডিও ধারণ করায় ইউপি সদস্য রাশেদুল তাকেও লাঠি দিয়ে মারপিট
করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি সদস্য রাশেদুলের মারপিটে চুরির দায়ে অভিযুক্ত যুবক মাটিতে বসে পড়েন। এ সময় ইউপি সদস্য নিজেই একটি লাঠি দিয়ে ওই যুবককে মারছেন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলছেন, ভিডিও করলি কেন? আরো ভিডিও কর, তোর কাছে আর মোবাইল নাই? যুবকটি এসময় লাঠির আঘাত ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন। ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে উপস্থিত লোকজনকে নীরব থাকতে দেখা গেছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রাশেদুল হক জানান, অভিযোগটি সত্য নয়। ভিীডওর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ভিডিও করেছে তার কাছ থেকে জানতে পারেন।

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, ঘটনার পর ভিডিও ধারণ করা যুবকের স্বজনদের সাথে ইউপি সদস্য রাশেদুল যোগাযোগ করে সমন্বয় করার চেষ্টা করছেন।

এলাকার লোকদের মধ্যে এ ঘটনা জানাতে ভয়-ভীতি লক্ষ্য করা গেছে। ভিডিও ধারণ করা জুয়েলের মুঠোফোন সংগ্রহ করে তাকে ফোন দেওয়া হলে নাম্বারটি ভুল নাম্বার বলে কেটে দেওয়া হয়।

সাইদুলের মা চন্দ্র বানু জানান, অনেক আগে তার ছেলের চুরির অভ্যাস ছিল। এখন তার আর ওই অভ্যাস নাই। তাকে
বিয়ে করিয়েছি, সংসার করছে। স্থানীয় একটি কারখানায় সে চাকুরী করতো। করোনাকালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়ে। সে এখন নতুন চাকুরি খুঁজছে। এখন সে আর চুরি করে না। তারপরও তাকে এলাকার মুরগী চুরির অভিযোগে ইউপি সদস্য রাশেদুল মানুষের সামনে ডেকে নিয়ে আমার ছেলেকে মারধোর করেছে। তবে জুয়েলকে এলাকায় কোথায় পাওয়া যায়নি।
ভাওয়াল মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়রম্যান ফজলুল হক মুসল্লী সাংবাদিকদের জানান, আমার ইউনিয়নে এরকম কোনো ঘটনা আমার জানা নাই। তাছাড়া কেউ এসব বিষয়ে আমাকে অভিযোগ করেনি।

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাতাব উদ্দিন জানান, এরকম কোনো ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে ঘটনাটি তদন্তে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা মিললে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

https://www.youtube.com/watch?v=0_JCXgL4i9I

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর