আজ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৫১তম শাহাদাতবার্ষিকী

আপডেট: October 28, 2022 |
হামিদুর রহমান
print news

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সাতজন ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ বাংলাদেশের অহংকার। যাদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বে জাতি গর্বিত, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান তাদের অন্যতম একজন। এই বীরশ্রেষ্ঠর ৫১তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ।

শ্রীমঙ্গলের ধলই বিওপি। এটি ছিল সিলেটে পাকিস্তানিদের শক্ত ঘাঁটি। একাত্তরের ২৮ অক্টোবর খুব ভোরে মুক্তিবাহিনী এই বিওপিতে আক্রমন চালায়। উদ্দেশ্য এ ঘাঁটি থেকে হানাদারদের হটানো। চা-বাগানের ভেতর হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলেন হামিদুর রহমান। দলের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কাইয়ুমের নির্দেশে সঙ্গে নিলেন মাত্র একটি হালকা মেশিনগান।

শত্রু ঘাঁটির একেবারে কাছে গিয়ে তিনি আকস্মিক হামলা চালালেন। নিহত হলো প্রতিপক্ষের অধিনায়কসহ কয়েকজন সেনা। শত্রু সেনারা পরিস্থিতি সামলে নিয়ে শুরু করলো পাল্টা আক্রমণ। কিন্তু হামিদুর রহমান পিছু হটলেন না। প্রাণপণে লড়াই চালিয়ে গেলেন। হঠাৎ একটি বুলেট এসে বিদ্ধ হল তার কপালে। হামিদুর রহমান বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে শহীদ হলেন।

পাঁচ দিন অবিরাম যুদ্ধের পর মুক্ত হলো ধলই বিওপি। হামিদুর রহমানের আত্মত্যাগই এ বিজয়ের পথ সহজ করে দিয়েছিল সেদিন।

মুক্তিযুদ্ধে বিরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরুপ হামিদুর রহমান সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ট খেতাবে ভূষিত হন।

সুদীর্ঘ ৩৬ বছর পর ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রাম থেকে তার দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় এবং ১১ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে ঢাকার মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

হামিদুর রহমান দেশের সর্বকনিষ্ঠ বীরশ্রেষ্ঠ। তার জন্ম ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায়। বাবা আক্কাস আলী মণ্ডল আর মা কায়েদাতুন্নেসা। বাবা ছিলেন দরিদ্র দিনমজুর। এই সামান্য জীবন থেকেই অসামান্য হয়ে উঠলেন মাত্র ১৮ বছর বয়সের সদ্য কৈশোর পেরোনো হামিদুর রহমান। হয়ে উঠলেন বীরশ্রেষ্ঠ, দেশের গৌরব।

হামিদুর রহমান ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সিপাহি। ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন।

তখন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ স্বাধিকার আন্দোলনে উত্তাল। ২৫ মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানে শুরু হয়ে যায় গণহত্যা। সেই রাতেই ১ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট আরও কিছু ইউনিট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। হামিদুর রহমান ছুটে যান মায়ের সঙ্গে দেখা করতে, কিন্তু তিনি কোনো কালক্ষেপণ করেননি, আবার ফিরে আসেন মুক্তিযুদ্ধে।

সিপাহি হামিদুর রহমান মাত্র ১৮ বছরের জীবনে হামিদুর সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, রক্তের অক্ষরে বাংলাদেশের ইতিহাসে লিখে যান নিজের নাম।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর