‘বঙ্গবন্ধু পরিষদকে মাতৃভাণ্ডারের সঙ্গে তুলনা স্বাধীনতাবিরোধী মতাদর্শের বহিঃপ্রকাশ’

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিখ্যাত মিষ্টির দোকান মাতৃভান্ডারের সাথে বঙ্গবন্ধু পরিষদকে তুলনা দিয়ে গণমাধ্যমে দেয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অনুমোদনহীন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি সাইদুল আল-আমিনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সংগঠনের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, স্বেচ্ছাচারী কায়দায় এবং অবৈধভাবে পরিচালিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের তথাকথিত সভাপতি সাইদুল আল-আমিন সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিষদকে কুমিল্লার মাতৃভাণ্ডারের সঙ্গে যে অবমাননাকর ও সামঞ্জস্যহীন তুলনা করে গণমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

তাঁর এমন বক্তব্য শুধু সংগঠন হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিষদকেই নয়, বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে তীব্রভাবে অসম্মান করেছেন। তাঁর এমন অর্বাচীন মন্তব্য বঙ্গবন্ধু পরিষদকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা জামায়াত-বিএনপি তথা বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দোসর ও অনুসারীদের সমন্বয়ে গঠিত স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের আসল চেহারাকেই উন্মোচিত করে। বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এহেন অপ্রাসঙ্গিক ও অবমাননাকর তুলনায় ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে ছড়িয়ে দেওয়া এবং এতদসংক্রান্ত শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে বঙ্গবন্ধু পরিষদের যাত্রা শুরু হয়। পরিষদের মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে যাতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো চক্র নস্যাৎ করতে না পারে, সেজন্য কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ যাচাইবাছাইকরতঃ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অনুমোদন দিয়ে থাকে। এটাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠিত সাংগঠনিক নিয়ম ও চর্চা। কিন্তু তথাকথিত সভাপতি সাইদুল আল-আমিন কেন্দ্রীয় পরিষদের ‘অনুমোদনের প্রয়োজন নেই’ বলে বঙ্গবন্ধু পরিষদের মতো একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও আদর্শিক প্রতিষ্ঠানকে একটি বাজারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যেভাবে তুলনা করেছেন, তা ধৃষ্টতাপূর্ণ, অবিবেচনাপ্রসূত, মানহানিকর ও হীনস্বার্থপ্রণোদিত।

তথাকথিত সভাপতি সাইদুল আল-আমিনের বক্তব্য ও স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ কতটা অসাড় ও অযৌক্তিক তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এর আগেও এ ধরনের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সাইদুল আল-আমিনের কথিত সভাপতিত্বে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু পরিষদও তেমনিই একটি চক্রান্ত। বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, সাইদুল আল আমিন তাঁর স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধ করবেন এবং একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সঙ্গে মাতৃভাণ্ডারের তুলনা করে যে ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করেছেন, তার জন্য ক্ষমা চাইবেন।

উল্লেখ্য, ‘কোন স্বার্থে কুবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে এতো দল-উপদল?’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিতহীন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি সাইদুল আল-আমিন বঙ্গবন্ধু পরিষদকে মাতৃভান্ডারের সাথে তুলনা করে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যটি ছিল, ‘কেন্দ্রের অনুমোদন খুব মজার একটি বিষয়। আমরা বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শকে চর্চা করি৷ এখানে অনুমোদন করার কিছু নেই। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের আশেপাশে অসংখ্য মাতৃভান্ডার আছে। সেগুলো তো নকল। তাই বলে কি মনোহরপুরে যে আসল মাতৃভান্ডার রয়েছে তারা কি তাদের নামের আগে আসল কথাটি উল্লেখ করে? সেই সূত্রে বলতে চাই, আমাদের বঙ্গবন্ধু পরিষদ কখনোই মনে করেনি যে অনুমোদন আনতে হবে। কারণ, আমরা নীতি আদর্শকে চর্চা করি।