গাজা উপত্যকায় আরও ১৫ হাজার শিশু জন্ম নেবে

আপডেট: November 15, 2023 |

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের আগ্রাসন চলছে। চলমান এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে জন্ম নিচ্ছে হাজারও শিশু। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলটিতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরও ১৫ হাজার শিশু জন্ম নেবে।

মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’। খবর আনাদোলু।

মানবাধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, জীবনের এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ গাজায় আরও ১৫ হাজার শিশু জন্ম নিতে যাচ্ছে। এসব শিশুর সবাই ‘ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যে গুরুতর ঝুঁকিতে’ এবং ‘চিকিৎসাসেবা, খাবার পানিসহ খাদ্য সংকটের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘সন্তান জন্মদানকারীদের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ নারী প্রসবকালীন বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছে।’ জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মতে, অবরুদ্ধ গাজায় প্রতিদিন প্রায় ১৮০ নারী সন্তান প্রসব করেন। ওই বিবৃতিতে গাজায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সেখানে ‘পর্যাপ্ত খাবার পানির সংকট, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব রয়েছে। স্তন্যদানকারী নারীরা পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। এর মধ্যে তীব্র সংকটের সম্মুখীন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো হামলার শিকার হয়েছে, যা অন্তঃসত্ত্বা এবং নবজাতকসহ হাজার হাজার রোগীকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়েছে।
গাজা উপত্যকায় সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মী মাহা শিফা হাসপাতালের বাইরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে তাকে অঞ্চলটির দক্ষিণাঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়।

হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের অবস্থা ভয়ংকর ছিল। বারান্দায় অন্তঃসত্ত্বা নারীরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। ইনকিউবেটরে অজ্ঞাত নবজাতক শিশু। যার পরিবারের কোনো সদস্যই জীবিত নেই। হাসপাতালে জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হই। আমি জানি না তারা বেঁচে আছেন কিনা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, গাজার মোট ৩৬ হাসপাতালের মধ্যে ২২টিই এখন ‘অকার্যকর’। অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসন লি বলেন, ‘একটি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে শিশুরা। এ যেন এক দুঃস্বপ্ন।

তাদের পরিবারগুলো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। চিকিৎসাসেবা ছাড়াই সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন নারীরা। নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুরা ইনকিউবেটরেই মারা যাচ্ছে।

এ সময় জেনারেটরগুলোকে সচল করতে গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার এবং স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোকে হামলা থেকে সুরক্ষিত রাখার দাবি জানান তিনি। জেসন বলেন, ‘এ সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। আমাদের যুদ্ধবিরতি দরকার এবং তা এখনই দরকার।’ ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরাইল।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ দেওয়া তথ্যানুসারে, এতে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৩২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের প্রায় ৭ হাজার ৮০০ জনই নারী ও শিশু। আর এ হামলায় আহত হয়েছে ২৯ হাজার ২০০ জনেরও বেশি।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর