ডিআইইউতে সিজিপিএ বানিজ্য: ১ বছর পর অব্যাহতিপত্র নিয়ে সমালোচনা

আপডেট: April 4, 2024 |

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) সহকারী রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) রওশন আলমের সিজিপিএ বাণিজ্যের একটি রেকর্ড গণমাধ্যমে আসার পর এবার তাকে অব্যাহতি দেখানো হয়েছে৷ তবে টাকার বিনিময়ে সিজিপিএ বিক্রির করার অভিযোগে রওশনকে অব্যাহতির এক বছর পর কেনো এই বিজ্ঞপ্তি এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা৷ অনুসন্ধান বলছে, সিজিপিএ বিক্রির এই চক্রের আরও অনেকেই বিচারের বাহিরেই রয়ে গেছেন৷

সম্প্রতি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক এস এম সাজ্জাদ আহমেদ শোভন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে৷

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা সকল ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, জনাব রওশন আলম, সহকারী রেজিস্টার (একাডেমিক) কে গত ৩১ মে ২০২৩ তারিখে পুরকৌশল বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রওশন আলমের কোন ধরনের সম্পর্ক নেই। যেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য আপনাদের সকলকে জনাব মোঃ সোহেল রানা, ডেপুটি রেজিস্টার (একাডেমিক) এর সাথে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিতেন রওশন আলম সহ একটি চক্র৷ এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে৷ সিজিপিএ বিক্রির এই ঘটনা জানাজানি হলে গোপনে রওশন আলমকে ছাটাই করা হয়৷ তবে এই চক্রের মূল হোতা অনেকেই এখনো বিচারের বাহিরে রয়েছেন৷

এদিকে গণমাধ্যমে আসা সেই সিজিপিএ বিক্রি অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, ডিআইইউ’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার রওশন আহমেদ এক শিক্ষার্থীর কাছে রেজাল্ট বিক্রির জন্য ২০ হাজার টাকা নেন মর্মে স্বীকার করেন৷ রওশন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের সম্মতি ছাড়া এই বাণিজ্য হয় না৷

রেকর্ডে আরও জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীর সাথে রওশন আহমেদ রেজাল্ট বিক্রি সংক্রান্ত কথাবার্তা বলেছেন এবং রেজাল্ট পরিবর্তনের জন্য তিনি টাকাও গ্রহণ করেছেন। তিনি একাধিক নাম্বারে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করেছেন।

রেকর্ডে রওশন আলম বলেন, ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে রেজাল্টের যদি কোনো কাজ হয় (বিক্রি) তাহলে সেটা আমি করতে পারি না। আমাকে যদি আপনি বলেন, তাহলে আমি চেয়ারম্যান স্যারকে বলব, স্যার এই কাজটা করে দেন। এই কাজে চেয়ারম্যান স্যার জড়িত থাকা লাগবে, চেয়ারম্যানের নির্দেশ লাগবে, এছাড়া হবে না। আমি জাস্ট মাঠপর্যায় থেকে লোক নিয়ে আসি। চেয়ারম্যান স্যার এটা করেন।’ ওই কথোপকথনে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একাধিক শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে পাশ করানোর কথা উঠে আসে। এছাড়া এই চক্রে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেন রওশন৷

সিজিপিএ বিক্রির দায়ে এক বছর পরে কেন রওশনকে অব্যাহতি দেখানো হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে সহকারী অধ্যাপক এস এম সাজ্জাদ আহমেদকে একাধিকবার কল এবং মেসেজ দিলেও তিনি উত্তর দেননি৷

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গণেশ চন্দ্র সাহা বলেন,আমি এখন মিটিং করছি এ বিষয়ে কথা বলতে পারব না।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর