সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনের দাফন সম্পন্ন


আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার ভোরে লাশগুলো তাদের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে পৌছালে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
পরিবারের সদস্যদের আহাজারীতে আকাশ বাতাস বাড়ি হয়ে ওঠে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় স্থানীয় মাঠে ৩ জন পুরুষ ও ১জন মহিলার মরদেহের পৃথক দুটি জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি সবাইকে দাফন করা হয়।
জানাযা নামাজে উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আত্মীয় স্বজন সহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হরিতলা নামক এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
নিহতরা হলেন, মৌজে আলী মৃধার ছেলে জামাল মৃধা(৪২) ও এনামুল ওরফে খোকন মৃধা (৩৫), নিহত জামাল মৃধার স্ত্রী কামরুন নাহার(৩০) ও ছেলে কাওসার ওরফে অন্তর(১২)।
সন্তানের মানত থাকায় প্রাইভেটকার যোগে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেট শাহজালাল মাজার জিয়ারত শেষে ফিরছিল পরিবারটি। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সবাই শোকে কাতর।
নিহত খোকনের স্ত্রী ইলমা বেগম (২১) তার দেড় বছরের কন্যা মিফতাহুলকে কোলে নিয়ে কাঁদছেন। স্বজনেরা তাঁকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
দুই ছেলে, ছেলের বউ ও নাতিকে এক সাথে হারিয়ে বাকরুদ্ধ জামাল ও এনামুলের মা ৮০বছর বয়সী হালিমা বেগম।
ঘরের বাইরে দুই ছেলের নাম ধরে জামাল-খোকন বলে কাঁদছিল। হাালিমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে জানান, এবারও ঈদের আগে আমাকে ঢাকা থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জামাল।
বলেছিলেন, কোরবানিতে বাড়িতে আসবেন। কিন্তু এই দুর্ঘটনা শেষ করে দিয়েছে সব আশা।
তিনি জানান, স্বামী মৌজে আলী মৃধা মারা যাওয়ার পর পুরো সংসারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন জামাল। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে যান জামাল।
তিন বোনকেও বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন কে তাদের দেখবে বলে কেঁদে ফেলেন হালিমা।
গলাচিপা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু জানান, নিহতের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এই জানাযায় সর্বস্তরের জনগন অংশ নেয়। এলাকায় শোকের মাতম চলছে।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন আল হেলাল নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।