আ.লীগের পদে স্বাধীনতা বিরোধী-জামায়াত পরিবারের সন্তান, অপসারণ চেয়ে মানবন্ধন
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বাধীনতা বিরোধী ও জামায়াত পরিবারের সন্তান মাহিবুল ইসলাম মুকিতের বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ।
আজ সকাল ১১ টায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে পলাশবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সকল ইউনিটের নেতাকর্মীরাদের সাথে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা এ মানব বন্ধনে অংশ নেয়।
এসময় তারা “স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্য মাহিবুল হাসান মুকিতের বহিষ্কার চাই, জামাতের পরিবারের সদস্য মুকিতকে আওয়ামী লীগের পদে দেখতে চাই না, মুকিত হটাও পলাশবাড়ী আওয়ামী লীগ বাঁচাও,মুকিতের বাড়ি শিবিরের মেস ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পলাশবাড়ী বাসি সবাই জানে জানেনা শুধু মুকিতের গডফাদাররা” ইত্যাদি লেখা প্লাকার্ড হাতে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।
উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি আতিক হাসান মিল্লাত ও সাধারণ সম্পাদক মামুনর রশীদ সুমনের নেতৃত্বে প্রায় চারশতাধিক ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা এতে যোগ দানে করে ।
মানব বন্ধনে তারা দাবী করেন যে, জামায়াত পরিবারের কোন সদস্য আওয়ামী লীগের কোন দায়িত্বশীল বা নির্বাহী পদে থাকতে পারবে না। তারা এই বিতর্কিত জামায়াত পুত্রের নেতৃত্ব মানেন না। অবিলম্বে মুকিতকে অপসারণ করে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বকে আরও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আজকের এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে পলাশবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা ।
সেইসাথে তারা জোরাল ভাবে উল্লেখ করেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের কোন সাংগঠনিক কর্মসূচীতে মাহিবুল ইসলাম মুকিতের অংশগ্রহণ তারা কখনই মেনে নেবে না।
পলাশবাড়ী উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক পলাশবাড়ী উপজেলার ছাত্রলীগের নেতা মো. শাহজান শেখ বলেন, “মুকিতের বাবা – মা দুজনেই জামায়াতের রোকন ছিলেন। তাদের বাসায় শিবিরের মেস ছিল। তৎকালীন সময়ে তার বাসায় বসবাসরত শিবিরের ক্যাডারদের মাধ্যমে আমরা অনেক নির্যাতনের স্বীকার হই।”
ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক তৌফিক আহমেদ শাওন বলেন, “বিতর্কিত এই মুকিতের নেতৃত্ব আমরা মানি না। অবিলম্বে আমরা মুকিতের বহিষ্কার চাই।”
পলাশবাড়ী উপজেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মোঃ আরিফ সরকার আপেল বলেন,“এরকম বিতর্কিত মুকিতকে নিয়ে সংগঠনকে গতিশীল করা সম্ভব না। জামায়াত পরিবারের এই সন্তানকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে এখানে পুনরায় দায়িত্ব অর্পন করা হোক।”
এর আগে পলাশবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ একই দাবীতে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
উল্লেখ্য মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আমিনুল ইসলাম নামে গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবর এক অভিযোগপত্র প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ তথ্যানুসারে সেই তদন্ত প্রতিবেদন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে প্রেরণ করেছেন।
জানা যায়, কেন্দ্রের কাছে প্রেরিত প্রতিবেদনে ২৮ জন সাক্ষীর কেউই ‘মুকিতের পরিবার জামায়াত সংশ্লিষ্ট নয়’ বলে মন্তব্য করেনি। বরং আধিকাংশ সাক্ষী মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেছেন। এমনকি মুকিতের বাড়িতে থাকা শিবিরের লজ বা মেস থেকে ২০১৩ সালে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা চালানোর অভিযোগও পাওয়া যায় সাক্ষীদের কাছ থেকে।