ইরানে বিক্ষোভ থামছে না
গ্রেপ্তার, দমন-পীড়ন ও গুলি করেও ইরানের বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছে না। দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে ধাপে ধাপে চলছে বিক্ষোভ। এনিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি শহরে সংঘর্ষেরও ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি জানিয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির সানানদাজ, মারিভান, বানেহ, ইলাম, সাকেজ, নিশাপুর, বুকান, কারমানসহ বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।
দেশটির কুজেস্তান প্রদেশের আহভাজ শহরের বিক্ষোভের একটি ভিডিও ছড়িয়েছে। এতে দেখা যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন।
ফ্রান্সভিত্তিক কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সানানদাজ, মারিভান, বাহেন, ইলাম, সাকেজ শহরে বিক্ষোভের সময় কমপক্ষে ৩৭ বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৯ জনকে। আরও একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইলাম শহরে এক বিক্ষোভকারীকে পেটানো হচ্ছে।
এদিকে কুর্দিস্তান প্রদেশের বানেহ শহরে ধারণা করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করতে পিকআপভ্যান নিয়ে ছুটছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ওই পিকআপভ্যান থেকে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। ইরানে বিক্ষোভ শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিদেশি সাংবাদিকেরা সেখানে খবর সংগ্রহ করতে পারছেন না। বিদেশি সাংবাদিকেরা মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন, এই অভিযোগ তুলে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফলে বিক্ষোভের অনেক তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না। হিজাব–সংক্রান্ত নীতি ভঙ্গ করার অভিযোগে দেশটির নীতি পুলিশ গত ১৩ সেপ্টেম্বর মাসা আমিনি নামের এক তরুণীকে আটক করেছিল। পুলিশি হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসার মৃত্যু হয়।
মাসার পরিবারের দাবি, মাসাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ ঘটনায় মামলাও করেছে। তবে পুলিশ বলছে, এই নারী তাদের হেফাজতে থাকলেও ‘হৃদ্যন্ত্র বিকল’ হয়ে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিক্ষোভের ২৯তম দিন ছিল শুক্রবার।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি