সারাদেশের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশেও নিরাপত্তা দেবে সরকার: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট: December 6, 2022 |

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সরকার দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেবে না। আমাদের নেতাকর্মীদেরও কর্তব্য আছে। ১০ ডিসেম্বর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালালে আমাদের নেতাকর্মীরা দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করবে। সরকার সারাদেশে তাদের সমাবেশে নিরাপত্তা দিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও দেবে।’

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বিএনপির ঢাকার সমাবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের সাথে আলোচনাকালে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু তারা এখন রাস্তার বদলে রাস্তায় চেয়ে বেড়াচ্ছে। যে ময়দান থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, যে ময়দানে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পন করেছিল, যেখানে তারাও অতীতে অনেক জনসভা করেছে, আমরা তো নিয়মিতভাবেই করি, সেখানে তাদের যেতে এতো অস্বীকৃতি, অনীহা কেন। তারা শুধু রাস্তায় জনসভা করতে চায়, গাড়ি-ঘোড়া ভাংচুর করতে চায়, জনজীবনে বিপত্তি ঘটাতে চায়।’

ড. হাছান বলেন, ‘সাংবাদিকরা এবং শহরের সাধারণ নাগরিকরা রাস্তায় জনসভার বিরুদ্ধে। কারণ এতে মানুষের ভোগান্তি হয়। সমাবেশের জন্য মাঠের বিকল্প হিসেবে বিএনপি আরেকটা মাঠের কথা বলতে পারে। সোহরাওয়ার্দীতে না চাইলে তারা বাণিজ্য মেলার মাঠ বা আরো বড় বিশ্ব ইজতেমার মাঠ যেখানে ২০ লাখ মানুষ ধরে, না হলে কামরাঙ্গির চরের মাঠেও যেতে পারে। তারা সেটা বলে না, বলে এই রাস্তা না হয় ঐ রাস্তা। মতিঝিলের রাস্তা যেখানে অনেক ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, সেটি কেন তাদের এতো পছন্দ। এটির পেছনেও গভীর ষড়যন্ত্র, দুরভিসন্ধি আছে। প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো জনসভা করতে চায় না, এটিকে ইস্যু বানাতে চায় এবং দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টায় তারা আছে।’

বিএনপি নেতা ইশরাক এবং রুহুল কবীর রিজভীর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আগুনসন্ত্রাসীরা তো বিএনপির নেতাকর্মী। আগুনসন্ত্রাস করার জন্য বিএনপির নেতারাই নির্দেশ এবং অর্থ দিয়েছিল। সেসবের অডিও রেকর্ডও আমাদের কাছে আছে। বিএনপি নেতাদের হাতে আগুন এবং মানুষের রক্ত লেগে আছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে, এখন পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টেলিভিশনে যারা বড় গলায় কথা বলছে তাদের হাতে মানুষের রক্ত এবং আগুন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং যাদের জামিন আদালত বাতিল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। তবে জনগণ মনে করে শুধু আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেই নয়, আগুনসন্ত্রাসের হোতাদের অর্থাৎ তাদেরকে যারা নির্দেশ দিয়েছে, পরিচালনা করেছে এবং অর্থ দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।’

বিএনপি নেতারা ঘনঘন কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করছেন এমন প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘এ দেশের মালিক জনগণ। এ দেশে কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে। এখানে কূটনীতিকদের বেশি কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি ক্ষণে ক্ষণে কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যায়। তাদেরকে কোলে করে কেউ ক্ষমতায় বসাবে না। এ দেশে কূটনীতিকরা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং কূটনীতিকদের কাছে বারবার ছুটে গিয়ে বরং তারা নিজেদের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করছে। বিদেশি কূটনীতিকরা যখন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে, আমি মনে করি তখন সেটি আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে অনেক সময় হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায় যেটি সমীচীন নয়। এজন্য কোনো রাজনীতিবিদের বা কোনো রাজনৈতিক দলের কূটনীতিকদের প্রোভোক করা উচিত নয়।’

এর আগে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাথে কপ-২৭ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ উল হক, সদস্য সাজু রহমান, হাবিব রহমান প্রমুখ সভায় অংশ নেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর