সিংগাইরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া এক বাদীর পরিবার আসামীদের ভয়ে ঘরছাড়া

আপডেট: July 13, 2023 |
inbound8778032555589902616
print news

সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া রিক্সা মেকানিক আনোয়ার হোসেন (৪১) চাঁদাবাজির মামলা করে আসামীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

প্রধান আসামি মিলনসহ অন্যরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মামলার বাদি আনোয়ার হোসেন উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের মৃত ছোবান মোল্লার পুত্র।

সে বর্তমানে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমিসহ ঘর পেয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন ।

অন্যদিকে, মামলার আসামীরা হচ্ছেন- একই গ্রামের মো. হাকিম আলীর ছেলে মিলন (৩০), মৃত হজরত আলীর ছেলে আবুল কালাম (৪৫), মৃত হোসেন আলীর ছেলে আব্দুল হাকিম (৫৫), মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে নাজিম (২৮) ও নান্নুর ছেলে মেহেদীসহ (২৭) আরো অজ্ঞাত ৪-৫জন।
ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে সিরাজপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মামলার বাদি ১১২ নং ঘরে স্ত্রী, কন্যা ও শিশু পুত্র নিয়ে বসবাস করেন।

মিলনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করার পর থেকে আনোয়ার হোসেন গত ১৫ দিন ধরে পরিবারের লোকজন নিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন ।

তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও তালা লাগিয়ে বন্ধ কর দেয়া হয়েছে। তারা আরো জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আনোয়ার হোসেনের সাথে মিলনের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

এ নিয়ে ইতিপূর্বে আনোয়ার থানায় লিখিত অভিযোগ করেও ফল পাননি। সম্প্রতি তার সিরাজপুর বাজারে ‘ভাই-বোন অটো হাউজ’ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেন মিলন ও তার লোকজন।

এতে আনোয়ার বাদি হয়ে গত ২১ জুন মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর আদালতে চাঁদাবাজির অভিয়োগে মামলা দায়ের করেন।

শুনানী শেষে মামলাটি আদালত পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত দেন।

এদিকে, সরেজমিন সিরাজপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে পাওয়া না গেলেও কথা হয় তার বৃদ্ধা মা মজিরনের সাথে।

ছেলের পালিয়ে থাকার বর্ণনার সময় আনোয়ার হোসেন চোখে-মুখে আতংক নিয়ে স্ত্রী সন্তান সাথে করে এ প্রতিবেদকের সামনে উপস্থিত হন।

এ সময় তিনি প্রশাসনের কাছে তার পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা দাবী করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো আজাহার সিদ্দিক বাদশা, চান্দহর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোকশেদ মাতব্বর শাহিন, রুবেল ও ফয়সালসহ অনেকে আনোয়ার হোসেনের পালিয়ে থাকার কথা স্বীকার করেন।

এ মামলার প্রধান আসামি মিলন বলেন, জমি কেনা বাবদ আমি আনোয়ারের কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাই। যার প্রমাণ স্বরুপ আমার কাছে স্ট্যাম্প রয়েছে।

জমি দলিল করে না দেয়ায় আমি স্থানীয় বাঘুলি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করলে আনোয়ার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ছাড়া আনোয়ারের দোকান ঘর তালা দেয়ার কথা ও অস্বীকার করেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) এস আই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মামলার কপি হাতে পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদিকে তার বাড়িতে পাইনি।

তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, মামলা তুলে নিতে বা হুমকির বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিতে আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর