ড. ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড স্থগিতের প্রশ্নে রায় আজ

আপডেট: March 18, 2024 |

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড স্থগিতের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর হাইকোর্টের রায় ঘোষণা আজ।

সোমবার (১৮ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রায় হওয়ার কথা।

এর আগে, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড স্থগিতের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজ সোমবার (১৮ মার্চ) দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন।

এর আগে, তৃতীয় শ্রম আদালতের ১ জানুয়ারি দেওয়া রায় ও আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ২৮ জানুয়ারি দেয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ড. ইউনূসসহ চারজন ও রাষ্ট্রের পক্ষে ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদিদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাজার রায় থেকে অব্যাহতি পাওয়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এ মামলার বাকি তিন আসামিকেও বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে একই আদেশ প্রতিপালন করতে হবে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা রিভিশন আবেনের ওপর শুনানি নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে ড. ইউনূসসহ চারজনের সাজার রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

এদিন ড. ইউনূসের ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায়ের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা আবেদনের বিষয়ে শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা তাদের বিরুদ্ধে সাজার রায় দেন। তাদের শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত।

এরপর আসামিপক্ষ আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে এক মাসের জন্য জামিন দেন। সেই সময়সীমার মধ্যেই আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। ড. ইউনূস ছাড়া অন্য তিন বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন। আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে নথি তলব করেন। এছাড়া আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত গত ১ জানুয়ারি দেওয়া দণ্ডের রায়ের কার্যক্রম স্থগিত করেন।

এ স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন। এছাড়া দণ্ডিতদের বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করে যেতে হবে বলে আদেশ দেন।

গত বছরের ৮ মে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ৬ জুন আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদি হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর