বিতর্কিত নারীবিষয়ক সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে: জামায়াত

আপডেট: April 20, 2025 |
inbound8743425424726864261
print news

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালাকে সরাসরি ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের ওপর ‘সুপরিকল্পিত আঘাত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

রোববার দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই সুপারিশমালা পবিত্র কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যা দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য, পারিবারিক কাঠামো এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি।” তিনি কমিশনের প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান।

পরওয়ার উল্লেখ করেন, কমিশনের সুপারিশমালার ২৫তম পৃষ্ঠায় মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে নারী-পুরুষের সমান সম্পত্তির প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যা কুরআনের স্পষ্ট নির্দেশনার বিরোধী। “এটি শুধু শরিয়াহ লঙ্ঘনই নয়, বরং মুসলিম পরিচয়ের ভিত্তিকে ধ্বংস করার একটি চেষ্টা,” বলেন তিনি।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “সুপারিশমালায় বিবাহকে নিরুৎসাহিত করে এবং ব্যভিচারকে পরোক্ষভাবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা কুরআনের মৌলিক শিক্ষা ও নৈতিকতার পরিপন্থী। এই ধরনের প্রস্তাব সমাজে চরম অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।”

গোলাম পরওয়ার বিশেষভাবে আপত্তি জানান কমিশনের ৯ম পৃষ্ঠার প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে, যেখানে ‘সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন’ প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি বাস্তবায়িত হলে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ – সবাইকে ধর্মীয় পারিবারিক বিধান থেকে বিচ্যুত করে একটি ধর্মহীন কাঠামোয় নিয়ে আসা হবে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার সরাসরি লঙ্ঘন।”

তিনি সমালোচনা করেন প্রস্তাবিত CEDAW (জাতিসংঘের নারীনীতি বিষয়ক সনদ) বাস্তবায়নের চেষ্টারও। তাঁর মতে, “CEDAW-এর কিছু ধারা ইসলামী নিকাহ, অভিভাবকত্ব এবং পারিবারিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে বিয়েকে কেবল একটি সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখা হয়, যা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়।”

পরওয়ার বলেন, “নারী-পুরুষের মর্যাদায় ইসলাম সমতা দিলেও, পারিবারিক ও সামাজিক ভূমিকায় পার্থক্যকে স্বীকৃতি দেয়। অথচ সুপারিশমালায় এই পার্থক্যকে মুছে ফেলার যে প্রয়াস রয়েছে, তা ইসলামী সমাজব্যবস্থাকে বিকৃত করার এক বিপজ্জনক প্রচেষ্টা।”

বিবৃতির শেষ অংশে তিনি দেশের আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ জনগণের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করেন যে, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনতার ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে এই বিতর্কিত সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিল করবেন এবং সব ধর্মের বিধান সমুন্নত রাখবেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর