আজ মোজাফফর আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

আপডেট: August 23, 2020 |

বাংলাদেশে সুস্থ ধারার রাজনীতির অন্যতম পথিকৃৎ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছরের ২৩ আগস্ট ৯৭ বছর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবীদ্বারে জন্মগ্রহণ করেন। অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মোজাফফর আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে ১৯৫৪ সালে রাজনীতিতে পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করেন। ওই বছর কুমিল্লায় যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রীকে হারিয়ে রাজনীতির পাদপ্রদীপে চলে আসেন। ১৯৫৭ সালে মওলানা ভাসানীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ছেড়ে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করেন। সে বছর ন্যাপের প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের আইনসভায় পূর্ব বাংলার পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন। পরের বছর আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর মোজাফফর আহমদের নামে হুলিয়া জারি হয়। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করে পাকিস্তানের সামরিক সরকার।

১৯৬৬ সালে আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন মোজাফফর আহমদ। ১৯৬৭ সালে মস্কো-পিকিং বিরোধে ভেঙে যায় ন্যাপ। মওলানা ভাসানী পিকিংপন্থি ন্যাপের সভাপতি ও ওয়ালি খান মস্কোপন্থি ন্যাপের সভাপতি হন। আর মোজাফফর আহমদ হন পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি। ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি কারাবরণ করেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম ছিলেন মোজাফফর আহমদ। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ছয় সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের একজন ছিলেন। ন্যাপ, সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নিয়ে গেরিলা বাহিনী গঠন এবং তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে যুদ্ধ পরিচালনায় মোজাফফর আহমদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর মোজাফফর আহমদ তার দল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাকশালে যোগ দেন। বাকশাল ভেঙে যাওয়ার পর ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ‘কুঁড়েঘরের মোজাফফর আহমদ’ গত দশক পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে।

২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদকের জন্য তার নাম ঘোষণা করা হলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানান।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর