দুই শিশুর অধিকার ফিরিয়ে দিতে মধ্যরাতে হাইকোর্টের আদেশ
শনিবার রাত এগারোটার পর দেশের একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলে নিয়মিত আলোচনা অনুষ্ঠান চলছিল। এ অনুষ্ঠানে রাজধানীর দুই শিশুর পৈত্রিক নিবাসে প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের নজরে আসে। তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে তাৎক্ষণিক (রোববার রাত ১২টার পর) হাইকোর্ট বসিয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে শিশু দুইটিকে বাড়িয়ে নিরাপদে পৌঁছে দিতে আদেশ দেন।
জানা যায়, রাজধানী ধানমণ্ডির একটি চারতলা বাড়ির মালিক সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবী। সম্প্রতি সাবেক অ্যাটর্নির ছোট ছেলে সিরাতুন নবী মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে তার দুই ছেলে কাজী আদিয়ান নবী ও কাজী নাহিয়ান নবীকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আগেই শিশু দুটির বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বাবার মৃত্যু হলে শিশু দুটি কিছুদিনের জন্য তার মায়ের আশ্রয়ে থাকতে যায়। মায়ের কাছ থেকে নিজ বাসায় ফেরার চেষ্টা করে ঐ দুই শিশু। কিন্তু তাদেরকে আর বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এরপর কয়েকবারের চেষ্টা করেও শিশু দুটি ঐ বাসায় প্রবেশ করতে পারেনি। এ বিষয়টি ধানমণ্ডি থানাকে জানানো হয়। তবে পুলিশের অনুরোধেও শিশুদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি তাদের চাচা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেহান নবী।
ঘটনাটি নিয়ে শনিবার রাতে একটি বেসরকারী টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচার ও আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শিশু দুটির সঙ্গে তাদের ফুফু, সাংবাদিক রেজওয়ানুল হক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে মধ্যরাতে (রোববার রাত ১২টার পর) হাইকোর্টের বেঞ্চ বসিয়ে আদেশ দেন বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। আদালতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি জানান, ধানমন্ডি থানার ওসিকে ঐ দুই শিশুকে তাদের বাসায় (দাদা বাড়ি) রাখতে আদালত আদেশ দিয়েছেন। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আদেশ বাস্তবায়ন করে সকালে প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া জানান, ঐ দুই শিশুকে রাত দেড়টার দিকে তাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টর কে এস নবী (কাজী শহীদুন নবী) ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বৈশাখী নিউজ/ এপি